সরাইলে সহিংসতার মামলায় দুই ব্যবসায়ী, এক হেফাজত কর্মী গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার
প্রতীকী ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল পুলিশ ক্যাম্পে হামলার ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় আরও দুই ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন অহিদ মিয়া (৩৬) ও আলমগীর হোসেন (৩০)। অরুয়াইল বাজারে তাঁদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে পুলিশ তাঁদের নিজ নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে গ্রেপ্তার করে।

অহিদ মিয়া উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের রানীদিয়া গ্রামের আর আলমগীর হোসেন উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের কালীশিমুল গ্রামের বাসিন্দা। তাঁরা পুলিশের দায়ের করা মামলার সন্দেহভাজন আসামি। এর আগে একই মামলায় পুলিশ এজাহারভুক্ত ২ জনসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা সবাই বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন।

এদিকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় করা মামলায় পুলিশ জামির হোসেন (৫৫) নামের হেফাজতের এক সক্রিয় কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের সীতাহরণ গ্রামের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার রাতে সরাইল থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন এজাহার নামীয়। বাকি সাতজন সন্দেহভাজন।

সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এম এম নাজমুল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, অরুয়াইল পুলিশ ক্যাম্পে হামলা মামলায় দুজন আর খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।

মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ মার্চ বেলা দুইটার দিকে অরুয়াইল বাজারে কয়েক হাজার হেফাজতের নেতা–কর্মী ও সমর্থক ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের বিরোধিতা করে লাঠিসোঁটা নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে সমাবেশ চলাকালে অরুয়াইল পুলিশ ক্যাম্পে হামলা চালান হেফাজতের সমর্থকেরা। এতে সরাইল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কবীর হোসেনসহ অন্তত ২০ পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনায় সরাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সজল চন্দ্র মজুমদার বাদী হয়ে ৬৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

অরুয়াইল পুলিশ ক্যাম্পে হামলার ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় শুক্রবার পর্যন্ত পুলিশ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে ৯ জনই অরুয়াইল বাজারের ব্যবসায়ী। একজন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক ও অন্যজন আওয়ামী লীগের সমর্থক। স্থানীয় লোকজন জানান, ২৭ মার্চ অরুয়াইল বাজারে হেফাজতের মিছিল-সমাবেশের সময়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে ব্যবসায়ীরা বাজারের দোকানপাট বন্ধ করে দেন। তাঁদের একটা অংশ ওই মিছিল সমাবেশে অংশ নিয়েছে। এতে বাজারের অনেক ব্যবসায়ীর মধ্যে এখন গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে।