সরাসরি বিক্রি কম, বেশি অনলাইনে

পাইকার কম থাকায় এবার গরু বিক্রি কম হচ্ছে। দামও কম উঠছে। দাম না উঠলে খামারিদের লোকসান হবে।

এবার ঢাকা ও অন্য জেলার ব্যাপারীরা না আসায় পাবনার হাটগুলো তেমন জমছে না। পাবনা সদরের আরিফপুর হাজির হাটেছবি : প্রথম আলো

পাবনা জেলা সদরসহ উপজেলার পশুর হাটগুলো জমে উঠতে শুরু করেছে। প্রচুর গরু-ছাগল উঠেছে হাটে, তবে বিক্রি সেভাবে বাড়েনি। প্রতিবছরের তুলনায় ক্রেতা কম বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। এর ফলে গরু-ছাগলের দাম কম উঠছে। তবে অনলাইনে ভালো বিক্রি হয়েছে বলে দাবি করেছেন বড় খামারিরা।

খামারিরা বলছেন, গোখাদ্যের দাম অস্বাভাবিক বাড়ায় এবার গরু পালনে বেশি খরচ হয়েছে। এ অবস্থায় দাম না উঠলে তাঁদের ব্যাপক লোকসান গুনতে হবে।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৯টি উপজেলায় ২৪ হাজার খামারে এবার প্রায় ৭ লাখ কোরবানির পশু বিক্রির জন্য প্রস্তুত হয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৭৭ হাজার গরু ও মহিষ এবং ৩ লাখ ৭১ হাজার ছাগল ও ভেড়া। এর অর্ধেক জেলার চাহিদা পূরণ করবে।

গত শুক্রবার জেলা সদরের সবচেয়ে বড় হাট হাজির হাট ঘুরে দেখা গেছে, পুরো হাট গরু-মহিষ, ছাগল-ভেড়ায় ঠাসা। বিভিন্ন এলাকা থেকে খামারি ও প্রান্তিক চাষিরা পশু নিয়ে হাজির হয়েছেন হাটে। তাঁরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছেন ক্রেতার অপেক্ষায়। তবে হাটে ক্রেতা কম। অনেকক্ষণ পরপর দু-একজন আসছেন, দরদাম করছেন। তাঁদের কেনার আগ্রহ খুব একটা নেই।

গতকাল শনিবার ভাঙ্গুড়া উপজেলার শরৎনগর হাটেও একই চিত্র দেখা যায়। তবে হাজির হাটের তুলনায় এ হাটে বিক্রি ভালো বলে জানান বিক্রেতারা। কোরবানির দিন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে এ বিক্রি আরও বাড়বে বলে মনে করেন তাঁরা।

দুই হাটে আসা বিক্রেতারা বলেন, স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা পশু কিনে ঢাকা ও চট্টগ্রামে নিয়ে বিক্রি করেন। এবার ঢাকায় পশুর হাট কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে পাইকারের সংখ্যা কমে গেছে। পাইকার কম থাকায় বিক্রি কম হচ্ছে। দামও কম উঠছে। ঈদের আগের এ সময়টাতে যে হারে গরু বিক্রি হয়, এবার সে রকম হচ্ছে না।

হাজির হাটে আসা খামারি রাজু আহম্মেদ বলেন, জেলা সদরের জালালপুর গ্রামে তাঁর খামার রয়েছে। সেখানে তিনি কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ব্রাহামা, অস্ট্রেলিয়ান, শাহিয়াল ও ফ্রিজিয়ান জাতের প্রায় ১০০ গরু পালন করেছিলেন। এর মধ্যে ৩০ মণ ওজনের ২টি গরু ছিল। গরু ২টি ২৬ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। ছোট গুরুর মধ্যেও প্রায় ৫০টি বিক্রি হয়ে গেছে। হাটের তুলনায় তিনি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বেশি গরু বিক্রি করতে পারছেন। এতে ঝামেলা কম ও লাভও ভালো মিলছে।

শরৎনগর হাটে শাহিবুল ইসলাম বলেন, তাঁদের খামারে এবার ১৬৫টি গরু ছিল। এর মধ্যে ৭৫টি গরু অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি হয়েছে। ৬২টি গরু হাটে তুলেছেন। এর মধ্যে সারা দিনে ২০টি বিক্রি হয়েছে। আগের তুলনায় গতকালের হাটে বিক্রি কিছুটা বেশি হয়েছে। দামও দিন দিন বাড়ছে।

জেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষ্ণ মোহন হাওলাদার বলেন, প্রথম দিকে ক্রেতা একটু কম থাকলেও দিন দিন তা বাড়ছে, দামও বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে খামারিদের লোকসানের আশঙ্কা নেই। ক্রেতারাও সঠিক দামে পশু পাবেন।