সহিংসতার ৮০ দিন পর থামবে ট্রেন, মর্যাদায় অবনতি

২৬ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়
ফাইল ছবি

হেফাজতের সহিংসতার কারণ ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে রেলসেবা বন্ধ থাকার ২ মাস ২০ দিন পর পাঁচ জোড়া মেইল ও এক জোড়া আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। আগামী মঙ্গলবার থেকে রেলস্টেশনে মেইল ট্রেন এবং বুধবার থেকে আন্তনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন যাত্রাবিরতি করবে। তবে রেলস্টেশনে মর্যাদা দ্বিতীয় শ্রেণি (বি ক্লাস) থেকে সাময়িকভাবে চতুর্থ শ্রেণিতে (ডি ক্লাস) অবনমিত করা হয়েছে।

আজ রোববার বাংলাদেশ রেলওয়ের ট্রাফিক ট্রান্সপোর্টেশন শাখার উপপরিচালক (অপারেশন) রেজাউল হক স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী প্রথম আলোকে বলেন, ১৫ জুন থেকে পাঁচ জোড়া মেইল ট্রেন এবং ১৬ জুন থেকে একজোড়া আন্তনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন থামবে। বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য স্টেশনে শুধু ট্রেন থামবে ও যাত্রী ওঠা-নামা করবে। অন্য কোনো অপারেশন চলবে না।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর এবং ঢাকার বায়তুল মোকাররম ও চট্টগ্রামের হাটহাজারি মাদ্রাসায় সংঘর্ষের ঘটনার প্রতিবাদে হেফাজতের নেতা–কর্মী ও কওমি মাদ্রাসার ছাত্ররা গত ২৬ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। একপর্যায়ে তাঁরা স্টেশনে থাকা ট্রেনের সিগন্যাল প্যানাল বোর্ডে আগুন ধরিয়ে দেয়। একে একে স্টেশনের সাতটি কক্ষে আগুন, এসব কক্ষের নথিপত্র ও আসবাব বের করে রেললাইনের ওপরে রেখে এবং রেললাইনের স্লিপার তুলে আগুন ধরিয়ে দেন। স্টেশনের সিগন্যাল প্যানেলসহ সবকিছু আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ায় ওই দিন থেকেই স্টেশনে সব ট্রেনের যাত্রাবিরতি বাতিল করা হয়। এর আগেও ২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত সঠিকভাবে কোনো তদন্ত হয়নি।

আগামী মঙ্গলবার থেকে মেইল ট্রেন এবং বুধবার থেকে পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন যাত্রাবিরতি করবে। তবে স্টেশনে কোনো প্রকার ট্রেনে টিকিট বিক্রি হবে না। শুধু ট্রেন থামবে এবং যাত্রী ওঠা-নামা করবে।

রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপকের (পূর্ব) আদেশসূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের সিগন্যালিংসহ সংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি সংস্কার বা প্রতিস্থাপিত না হওয়া পর্যন্ত শুধু যাত্রীসুবিধা বিবেচনায় বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা জন্য স্টেশনটিকে সাময়িকভাবে চতুর্থ শ্রেণির (ডি ক্লাস) স্টেশন হিসেবে পরিচালনা করা হবে। ১৫ জুন থেকে পাঁচ জোড়া মেইল এক্সপ্রেস/কমিউটার এবং ১৬ জুন থেকে এক জোড়া আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি করবে। পাঁচ জোড়া মেইল ট্রেনগুলো হলো মেইল এক্সপ্রেস/কমিউটার, সুরমা মেইল, ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস, কর্ণফুলী কমিউটার, তিতাস কমিউটার।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের মাস্টার মো. সোয়েব প্রথম আলোকে বলেন, গত ২৬ মার্চ রেলস্টেশনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার থেকে মেইল ট্রেন এবং বুধবার থেকে পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন যাত্রাবিরতি করবে। তবে স্টেশনে কোনো প্রকার ট্রেনে টিকিট বিক্রি হবে না। শুধু ট্রেন থামবে এবং যাত্রী ওঠা-নামা করবে।