সাঁথিয়ায় সাংসদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ বিএনপির

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন পাবনার সাঁথিয়া পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম। বুধবার দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে।
ছবি: প্রথম আলো

পাবনার সাঁথিয়া পৌরসভা নির্বাচনে স্থানীয় সাংসদ শামসুল হকের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম।

একই সঙ্গে বিএনপির প্রার্থী শামসুল হকের ছেলে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য আসিফ শামসের বিরুদ্ধে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগও করেছেন।

আজ বুধবার দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে সিরাজুল এসব অভিযোগ করেন। সাংসদের হস্তক্ষেপের কারণে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলেও তিনি দাবি করেন।

বিএনপি প্রার্থীর কোনো অভিযোগই ঠিক নয়। মিথ্যা অভিযোগের পুরোনো সংস্কৃতি থেকেই বিএনপির নেতারা এসব অভিযোগ করছেন।
শামসুল হক, সাংসদ, পাবনা-১ (বেড়া-সাঁথিয়া)

লিখিত বক্তব্যে বিএনপির প্রার্থী বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই সাংসদ শামসুল হক এলাকায় অবস্থান করছেন। ৪ জানুয়ারি তিনি সাঁথিয়া ছেচানিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে নৌকার পক্ষে ভোট চেয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ১১ জানুয়ারির সমাবেশে তিনি নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালান।

১২ জানুয়ারি সাঁথিয়ায় নৌকা প্রার্থীর সমাবেশে উপস্থিত হয়ে শামসুল হক ভোট চান বলেও অভিযোগ করেন সিরাজুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে সিরাজুল আরও বলেন, শুধু সাংসদ নন, তাঁর ছেলে আসিফ শামস প্রচারণা শুরুর পর থেকেই নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন। আসিফ ১১ জানুয়ারি প্রকাশ্যে সমাবেশে নৌকায় ভোট না দিলে ভোটারদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। যেকোনো প্রক্রিয়ায় তিনি নৌকাকে জয়ী করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করছেন।

আসিফের বাহিনী এলাকায় সারাক্ষণ মহড়া দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির প্রার্থী।

এসব বিষয়ে পাবনা-১ (বেড়া-সাঁথিয়া) আসনের সাংসদ শামসুল হক বলেন, বিএনপি প্রার্থীর কোনো অভিযোগই ঠিক নয়। মিথ্যা অভিযোগের পুরোনো সংস্কৃতি থেকেই বিএনপির নেতারা এসব অভিযোগ করছেন।

সাংসদ আরও বলেন, ‘দলীয় কর্মসূচি ও সরকারি অনুষ্ঠানে আমি কয়েকবার সাঁথিয়া গিয়েছি। সাধারণ মানুষ এগিয়ে এলে তাঁদের প্রতিনিধি হিসেবে কথা বলেছি। তবে তা আচরণবিধি ভঙ্গ করে নয়, প্রভাব বিস্তার করেও নয়। জানামতে বিএনপি প্রার্থীর সমর্থকেরাই আমাদের নেতা-কর্মীদের পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।’

তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মাহবুবুর রহমান, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, পাবনা

সিরাজুল ইসলাম বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনের প্রতিটি বিষয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), জেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এতে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়ার অবস্থা নেই।

তাই নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন বিএনপির প্রার্থী।

এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচনের আচরণবিধি দেখার জন্য ওই এলাকায় আমাদের তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন। তাঁদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ধোপাদহ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সালাহউদ্দিন খান, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান, ইডেন কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক সহসভাপতি (ভিপি) খায়রুন্নাহার প্রমুখ।