সাংবাদিক বুরহান হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি কাদের মির্জার

আবদুল কাদের মির্জা
ফাইল ছবি

নোয়াখালীতে সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন ওরফে মুজাক্কির হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। একই সঙ্গে তিনি সাংবাদিক মুজাক্কির হত্যার ন্যায়বিচার এবং মিথ্যা মামলায় আটক করা তাঁর কর্মীদের মুক্তির দাবি করেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে বসুরহাট পৌরসভা মিলনায়তনে করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে আয়োজিত জনসচেতনতামূলক সমাবেশে কাদের মির্জা এসব কথা বলেন।

‘সত্যবচনে’ আলোচিত কাদের মির্জা সমাবেশে বলেন, ‘আমি বাঘ না হলেও শিয়াল নই। শিয়ালের মতো মৃত্যু চাই না। সিংহের গর্জন করে বাঘের মতো মরতে চাই।’ সেতুমন্ত্রীর ভাই কাদের মির্জা বলেন, ‘আমার প্রাসাদসম ভাবমূর্তি সৃষ্টি হওয়ায় আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ঈর্ষা জেগেছে। এরা সবাই তাদের নিজস্ব ব্যক্তি স্বার্থে, এদের কেউ দলীয় পদ লাভ, চেয়ারম্যান-মেয়র হওয়া, আধিপত্য বিস্তার, অস্ত্র-মাদক ব্যবসা, টেন্ডার-বাণিজ্য, ব্যবসা-বাণিজ্য করার জন্য আমার বিরোধিতা করছে এবং একত্র হয়েছে।’

সমাবেশে উপস্থিত দলীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের গণস্বাক্ষর গ্রহণ করেন কাদের মির্জা। স্বাক্ষর গ্রহণ শেষে তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনার ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করবেন। আর তিনি যে যে ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দিয়েছেন সেসব প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইবেন।
কাদের মির্জা এ সময় মুছাপুর ইউনিয়নে আমেরিকাপ্রবাসী আইয়ুব আলী ও চরহাজারী ইউনিয়নে আমেরিকাপ্রবাসী এ এস এম মাঈন উদ্দিন পিন্টুকে তাঁর মনোনীত প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলেন, নৌকা প্রতীক না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করার প্রস্তুতি ও সাহস রাখতে হবে।

প্রসঙ্গত, কাদের মির্জা এর আগে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে তাঁর মনোনীত আটজন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে একাধিকবার পরিবর্তনের পর পুনরায় এই দুজন প্রার্থীকে পরিচয় করিয়ে দেন।

কাদের মির্জা অভিযোগ করেন, কেন্দ্রের নির্দেশে কোম্পানীগঞ্জে দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড স্থগিত থাকলেও তা অমান্য করে গত দুই দিন নোয়াখালী-৪ আসনের সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরী ও ফেনীর সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারীর নির্দেশে এখানকার সন্ত্রাসীরা দক্ষিণাঞ্চলে দলীয় কর্মকাণ্ড ও একাধিক সমাবেশ করেছে।

কাদের মির্জা বলেন, ‘আমার কয়েকজন কর্মীকে ডিবি পুলিশ আটক করে নির্যাতন চালাচ্ছে, এখনো ছেড়ে দেয়নি। আমি নোয়াখালীর পুলিশ সুপারকে বলেছি, বসুরহাট আসুন, উপজেলা মসজিদে বসব, পুলিশের ওপর আমার লোকেরা হামলা করে থাকলে তা প্রমাণিত হলে আমার বিচার করবেন। আর এটা যদি সত্য না হয় তাহলে কী করবেন? বলার সাথে সাথে তিনি মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।’

গত মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশনা পেয়ে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী দলীয় শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও সব সহযোগী সংগঠনের রাজনৈতিক কর্মসূচি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করেন। একই নির্দেশনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভেও কেউ কোনো ধরনের রাজনৈতিক উসকানিমূলক স্ট্যাটাস বা বক্তব্য দিতে পারবে না বলে দলীয় নির্দেশ দেওয়া হয়।