সাংসদ-চেয়ারম্যানের টিকা দেওয়ার ঘটনায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি

কুষ্টিয়া কুমারখালীতে করোনা টিকা পুশ করছেন স্থানীয় সাংসদ সেলিম আলতাফ জর্জ
ছবি সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে সাংসদ-চেয়ারম্যানের করোনার টিকা দেওয়ার বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি স্বাস্থ্য বিভাগ। ঘটনার ছবি–ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর জেলার মানুষের মধ্যে সমালোচনা চললেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।

জেলায় করোনার টিকা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের কাজে নিয়োজিত একটি সংস্থার কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘করোনা টিকা দেওয়ার জন্য নির্দিষ্টভাবে নার্সদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। অনেক নার্স টিকা দিতে পারেন। তবে নির্দিষ্ট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছাড়া কোনো নার্স করোনা টিকা দিতে পারবেন না, সেখানে অন্য কেউ তো দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।’

গতকাল করোনা টিকা প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধনের সময় কুমারখালীতে নার্সের পরিবর্তে স্থানীয় সাংসদ সেলিম আলতাফ জর্জ ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান খান টিকা পুশ করেন। এমন ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

করোনা টিকাদানের জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়। উপজেলা পর্যায়ে কমিটির সভাপতি সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সদস্যসচিব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও ছবিতে কুমারখালীর ঘটনার সময় এ দুজন কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

টিকা দিচ্ছেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান খান
ছবি: সংগৃহীত

কয়েকটি সূত্র জানায়, করোনার টিকা তদারকির জন্য কুষ্টিয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক কর্মকর্তা কাজ করছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সার্ভিলেন্স অ্যান্ড ইমুনাইজেশন মেডিকেল অফিসার লী শান্তা মন্ডল আজ সোমবার সকালে কুমারখালী ও খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। সেখানে টিকাদান কার্যক্রম ঘুরে দেখেন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের বিষয়টি সম্পর্কে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ও নার্সদের সঙ্গে কথা বলেন। টিকাদানের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

বিকেল সাড়ে চারটায় সিভিল সার্জন কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আকুল উদ্দিন বের হচ্ছেন। রোববারের ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেছে। তবে সাংসদের টিকা দেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, সাংসদ সিরিঞ্জ ধরে ছিলেন।

ঘটনা নিয়ে সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, কুমারখালীতে টিকাদানে যে ঘটনা ঘটেছে, সে বিষয়ে কোনো কিছু করা হয়নি। তবে যাঁরা টিকা নিয়েছেন, এমন তিনজনের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁরা সুস্থ আছেন। কোনো সমস্যা তাঁদের হয়নি। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয় থেকেও কোনো নির্দেশনা আসেনি।

এ ব্যাপারে তদন্ত হচ্ছে কি না জানতে চাইলে সিভিল সার্জন বলেন, যেহেতু মন্ত্রণালয় বা বিভাগীয় পরিচালকের কাজ থেকে কোনো নির্দেশনা আসেনি। তাই কোনো তদন্ত বা কিছুই করা হচ্ছে না।