সাংসদ শাহীন চাকলাদারের বিরুদ্ধে ‘হত্যা পরিকল্পনার’ অভিযোগ

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন। রোববার যশোর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে।
সংগৃহীত

যশোর-৬ আসনের (কেশবপুর) সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের বিরুদ্ধে ‘হত্যা পরিকল্পনার’ অভিযোগ তুলেছেন এক জনপ্রতিনিধি। যশোর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এবং জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ওরফে বিপুল রোববার দুপুরে যশোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার কাছে খবর আছে, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের যশোর শহরের কাঁঠালতলাস্থ ব্যক্তিগত কার্যালয়ে বসে আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ওই অফিসে বসেই তাঁর নির্দেশে আমার বিরুদ্ধে তাঁর ক্যাডাররা নানা অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে।’

অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে রোববার সন্ধ্যায় সাংসদ শাহীন চাকলাদার মুঠোফোনে বলেন, ‘সে (আনোয়ার) মস্তিষ্কবিকৃত একটি ছেলে। তার সম্পর্কে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’

সংবাদ সম্মেলনে আনোয়ার হোসেন বলেন, গত সংসদ নির্বাচনে শাহীন চাকলাদার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করে যশোর-৬ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ওই পদে (উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান) দলীয় মনোনয়ন পেলে তিনি নির্বাচন করতে ইচ্ছুক। আনোয়ার দাবি করেন, ‘আমার জনপ্রিয়তায় ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ঈর্ষান্বিত হয়ে তাঁর (শাহীন চাকলাদারের) ক্যাডাররা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্নস্থানে নানাভাবে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছেন।’

আমি আগে শাহীন চাকলাদারের পক্ষে ছিলাম। এখন কাজী নাবিলের সাথে আছি। আগামী যশোর সদর উপজেলা পরিষদ উপনির্বাচনে আমি চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে চাই। এ জন্য পথের কাঁটা হিসেবে আমাকে তিনি (শাহীন চাকলাদার) সরিয়ে দিতে চান।
আনোয়ার হোসেন, যশোর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান

আনোয়ার হোসেন বলেন, করোনাকালে যশোরের পেপসি গোডাউন থেকে কিছু চাল, ডালসহ বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রী আটক করা হয়। কর্মহীনদের মধ্যে বিতরণের জন্য প্যাকেট করার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেগুলো আটক করেন। পরে বৈধ কাগজপত্র দেখে আদালত সেই ত্রাণসামগ্রী আবার ফেরত দিয়েছেন। এ ঘটনাকে পুঁজি করে ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী তাঁর বিরুদ্ধে চাল চুরির অপবাদ দিয়ে সামাজিক মাধ্যমে অপপ্রচার চালায়।

হত্যার পরিকল্পনার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি আগে শাহীন চাকলাদারের পক্ষে ছিলাম। এখন কাজী নাবিলের সাথে আছি। আগামী যশোর সদর উপজেলা পরিষদ উপনির্বাচনে আমি চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে চাই। এ জন্য পথের কাঁটা হিসেবে আমাকে তিনি (শাহীন চাকলাদার) সরিয়ে দিতে চান।’ হত্যার ষড়যন্ত্রের বিষয়ে তিনি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। সোমবার এ ঘটনায় আদালতে মামলা করা হবে বলে তিনি সংবাদ সম্মেলনে জানান।
যশোরের আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে দুটি পক্ষ রয়েছে। এক পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন যশোর সদর আসনের সাংসদ কাজী নাবিল আহমেদ ও অপর পক্ষের নেতৃত্বে আছেন যশোর আসন থেকে নবনির্বাচিত সাংসদ শাহীন চাকলাদার।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি জাবের হোসেন, খন্দকার মারুফ হুসাইন, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম, যশোর পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাওয়ান হোসেন, সদস্য তসিকুর রহমান, এমএম কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আরাফাত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।