সাংসদের কার্গোর বেপরোয়া গতি ও সেতুর ভুল নকশাকে দায়ী করেছে কমিটি

উদ্ধার করার পর ডুবে যাওয়া লঞ্চ সাবিত আল হাসান
ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের কয়লাঘাট এলাকার শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবির জন্য কার্গো জাহাজের বেপরোয়া গতি ও নির্মাণাধীন তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর ত্রুটিপূর্ণ নকশাকে দায়ী করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি। একই সঙ্গে নদীর মাঝখানে নির্মাণাধীন তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর পিলার স্থাপন করা এবং নৌপথে প্রতিবন্ধকতামূলক নির্মাণসামগ্রী রেখে নৌপথ সরু করে ফেলাকে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে ৪ এপ্রিল সাংসদ শেখ তন্ময়ের মালিকানাধীন কার্গো জাহাজ এসকেএল–৩–এর ধাক্কায় এমএল সাবিত আল হাসান নামের মুন্সিগঞ্জগামী একটি লঞ্চ ডুবে ৩৪ জন নিহত হন। ওই ঘটনা তদন্তে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিএ পৃথক তিনটি কমিটি গঠন করে। এর মধ্যে নৌপরিহন মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি গত সোমবার নৌসচিব মেজবাহ্ উদ্দীন চৌধুরীর কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা রোধে কয়েকটি সুপারিশও করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে ২২ থেকে ২৩টি সুপারিশ করা হয়েছে।

২৭ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসকেএল–৩ কার্গো জাহাজটির বেপরোয়া গতি দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। চালকের বেপরোয়া গতি, অদক্ষতা ও অবহেলার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা রোধে সেতুর পিলার সরিয়ে নদীর প্রশস্ততা বাড়ানো, ছোট আকারের সাংকেন ডেকবিশিষ্ট লঞ্চ ক্রমান্বয়ে সরিয়ে নেওয়া, যেখানে–সেখানে অলস জাহাজ নোঙর ও লোড আনলোড বন্ধ করা, চালকদের দক্ষ ও সচেতন করতে প্রশিক্ষণের আয়োজন করা, সার্ভেয়ারের সংখ্যা বাড়ানোসহ বেশ কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এই তদন্ত প্রতিবেদনটিতে।

তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী এসকেএল-৩ জাহাজটি প্রথম শ্রেণির মাস্টার ওয়াহিদুজ্জামান ও ডুবে যাওয়া লঞ্চটি তৃতীয় শ্রেণির চালক জাকির হোসেন চালাচ্ছিলেন। কার্গো জাহাজটির নিবন্ধন থাকলেও সার্ভে অনুমোদন ছিল না। তদন্ত প্রতিবেদনে এসকেএল-৩ নামক পণ্যবাহী জাহাজের মাস্টার ও ড্রাইভারের জবানবন্দি, ডুবে যাওয়া লঞ্চ সাবিত আল হাসানের মাস্টার, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট সার্ভেয়ার, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বক্তব্য সংযুক্ত করা হয়েছে।