সাংসদের গাড়িতে ঢিল ছোড়ার ঘটনাকে ‘ষড়যন্ত্র’ দাবি করে মানববন্ধন

সিলেটের বিশ্বনাথে সাংসদের গাড়িতে ঢিল ছোড়ার ঘটনায় হওয়া মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন। আজ বিকেলে উপজেলা সদরের নতুনবাজার এলাকায়।প্রথম আলো

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় সাংসদ মোকাব্বির খানের গাড়িতে ঢিল ছোড়ার ঘটনাকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের একটি অংশ ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেছেন। এ ঘটনায় হওয়া মামলা প্রত্যাহার করে গ্রেপ্তার হওয়া যুবলীগ নেতার মুক্তির দাবি করেছেন তাঁরা।

আজ রোববার বিশ্বনাথ সদরের নতুনবাজার এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ডে মানববন্ধন করে ওই দাবি করা হয়। একই দাবিতে মিয়ারবাজারেও যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ব্যানারে পৃথক মানববন্ধন করা হয়।

ওই দিন যা ঘটেছে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সামনেই ঘটেছে। যাঁরা একে ষড়যন্ত্রমূলক বলছেন, তাঁদের দাবি হাস্যকর।
অসিত রঞ্জন দেব, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা, সাংসদ মোকাব্বির খান

দলীয় সূত্রে জানা যায়, ওই দুটি স্থানে মানববন্ধনকারী ব্যক্তিরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম নুনু মিয়ার অনুসারী। মানববন্ধনের ব্যানারে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে নুনু মিয়ার ছবিও ছিল। তবে এ ব্যাপারে নুনু মিয়া কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

গত সোমবার দুপুরে বিশ্বনাথ উপজেলা আইনশৃঙ্খলা ও মাসিক সমন্বয় কমিটির সভা হয়। এতে যোগ দিতে গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সিলেট-২ (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) আসনের সাংসদ মোকাব্বির উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ে যান। কার্যালয়ের ফটকের সামনে পৌঁছালে তাঁর গাড়িতে ঢিল ছোড়া হয়। পরে সাংসদ ঘটনাটি সভায় তুলে ধরেন। সভায় ঘটনাটির নিন্দা করা হয়।

পুলিশ জানায়, ওই ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার রাতে বিশ্বনাথ থানায় সাংসদ মোকাব্বিরের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) অসিত রঞ্জন দেব দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেন। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক শামীম আহমদ, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা দবির আহমদ, উপজেলা যুবলীগের সদস্য কামরুজ্জামান ও জুনাব আলীর নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়। পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে দবিরকে গ্রেপ্তার করে। বাকি আসামিরা পলাতক।

ওই ঘটনাকে ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে আজ বিকেলে বিশ্বনাথ সদরের নতুনবাজার এলাকায় মানববন্ধন করা হয়। এতে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের অর্থসম্পাদক সেলিম আহমদ সভাপতিত্ব করেন। লামাকাজী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জহির আহমদ এটি সঞ্চালনা করেন। মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ময়না মিয়া ও নুরুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক লীগের রফিক আলী, সোহেল খান, আলী আকবর ও আফাজ উদ্দিন, যুবলীগের বুরহান উদ্দিন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ওই ঘটনা পুলিশের সামনেই ঘটে। সে সময় পুলিশ নির্বিকার ছিল। একদিন পর মামলা করে তাৎক্ষণিকভাবে একজনকে গ্রেপ্তার করায় পুরো ঘটনাটি ষড়যন্ত্র বলে প্রকাশ পেয়েছে। এ মামলা প্রত্যাহার করে গ্রেপ্তার হওয়া দবির আহমদের মুক্তি দিতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আজ রাত সাড়ে ৯টার দিকে মামলাটির বাদী অসিত রঞ্জন দেব বলেন, ওই দিন যা ঘটেছে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সামনেই ঘটেছে। যাঁরা একে ষড়যন্ত্রমূলক বলছেন, তাঁদের দাবি হাস্যকর।