সাংসদ শামসুল হকের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষের সমর্থকদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ

পাবনা–১ আসনের সাংসদ শামসুল হক
ছবি: সংগৃহীত

পাবনার বেড়া পৌরসভা নির্বাচনে ছেলেকে বিজয়ী করতে পাবনা-১ আসনের সাংসদ শামসুল হক প্রতিপক্ষের লোকজনকে হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি প্রকাশ্যে প্রতিপক্ষের লোকজনকে এলাকাছাড়া করার ও পিষে দেওয়ার কথা বলেছেন। সম্প্রতি ধারণ করা একটি ভিডিও ক্লিপে সাংসদকে হুমকি-ধমকি দিতে দেখা গেছে।

গতকাল শনিবার ওই ভিডিও ক্লিপ আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ আবদুল বাতেন রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দিয়েছেন। জেলা জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা ও পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান ওই ভিডিও ক্লিপ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি তাঁরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, সাংসদ শামসুল হক টুকু বলেছেন, ‘আমি মায়াদয়া করব না কিন্তু। পিষে দেব। ওখানে যাবি না। তোগোরে পুলিশ দিয়ে মারতেও আমার ভয় লাগে, খারাপ লাগে। যে কয়টাকে মারবনে, চার-পাঁচটাকে। এর একটা আমিনুল, দেহিসনে কী অয়।’ গত শুক্রবার সকালে পৌর এলাকার বৃশালিখা পশ্চিমপাড়ার রাস্তা দিয়ে আবদুল বাতেনের সমর্থক ইয়ামিন হোসেনসহ কয়েকজন যাচ্ছিলেন। এ সময় শামসুল হক টুকু তাঁদের এই হুমকি দেন। এ সময় তিনি ইয়ামিনকে আরও বলেন, ‘যাবি, না যাবি না। আজকে নৌকার মিছিল করবি। নৌকা হলো জাতির প্রতীক।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল বাতেনের সমর্থক ইয়ামিন হোসেন বলেন, ‘আমি আর এখন এলাকায় নাই। স্ত্রীকে নিয়ে অন্যত্র আছি। হুমকি-ধমকির বিষয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না।’

বেড়া পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ আবদুল বাতেন বলেন, ‘নির্বাচনে ছেলেকে জয়ী করতে শামসুল হক উঠেপড়ে লেগেছেন। এলাকায় তাঁদের বাবা–ছেলের কোনো জনসমর্থন নেই। তাই এখন ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোট নিতে চাচ্ছেন। আমি বিষয়টি নির্বাচন অফিসে জানিয়েছি।’

মেয়র পদপ্রার্থী আবদুল বাতেনের কর্মী-সমর্থকদের হুমকি-ধমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে সাংসদ শামসুল হক বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আমাকে আচরণবিধি মেনে চলতে বলেছে। আমি আচরণবিধি জানি। সেটা মেনে চলছি। অন্যদিকে ভয়ভীতির যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেটা ঠিক না। এগুলো মিথ্যাচার। আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করতে এই  মিথ্যাচার করা হচ্ছে।’

এর আগে শামসুল হক টুকুর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলেন তাঁর ভাই আবদুল বাতেন। এ ঘটনায় ১৪ নভেম্বর শামসুল হককে এলাকাছাড়ার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।  

জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, ২৮ নভেম্বর বেড়া পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে সাংসদ শামসুল হকের পরিবার থেকেই রয়েছেন তিনজন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাংসদের ছেলে ও কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা এস এম আসিফ শামস, সাংসদের ছোট ভাই বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান মেয়র আবদুল বাতেন এবং সাংসদের ভাতিজি (বড় ভাইয়ের মেয়ে) এস এম সাদিয়া আলম।

এ ছাড়া ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসাবে জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য এইচ এম ফজলুল হক এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা ও সোনালী ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি কে এম আবদুল্লাহ এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।