সাতক্ষীরায় ‘চতুর্মুখী লড়াইয়ে’ আ.লীগ প্রার্থী সুবিধাজনক অবস্থানে

চতুর্থ দফায় আগামীকাল রোববার সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

পৌরসভা নির্বাচন
প্রতীকী ছবি

সাতক্ষীরা পৌরসভা নির্বাচনের বাকি মাত্র এক দিন। আগামীকাল রোববার ভোটের মাঠে মেয়র পদে লড়ছেন পাঁচজন। এর মধ্যে বিএনপির দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি যুবদলের সাবেক নেতা ও জামায়াতের এক নেতা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে লড়ছেন। দলের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী না থাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন বলে মনে করছেন ভোটাররা। তবে নির্বাচনের পরিবেশ ভালো থাকায় লড়াই ‘চতুর্মুখী’ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, চতুর্থ দফায় আগামীকাল রোববার সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ৩১ দশমিক ৩ বর্গকিলোমিটার পৌরসভার ৩৭টি ভোটকেন্দ্রে ৮৯ হাজার ২২৪ জন ভোটার ভোট প্রয়োগ করবেন।

মেয়র পদে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নাসেরুল হক (নৌকা), বর্তমান মেয়র ও জেলা বিএনপির নেতা মো. তাসকিন আহমেদ (ধানের শীষ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত এস এম মুসতাফীজ-উর-রশিদ (হাতপাখা), জেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল হুদা (জগ) ও জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসিম ফারুক খান মিঠু (নারিকেলগাছ) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এবার জাতীয় পার্টি কোনো প্রার্থী নেই।

দেশ বিভাগের পর থেকে সাতক্ষীরা পৌরসভার চেয়ারম্যান ও মেয়র পদে মাত্র দুইবার জয়ের মুখ দেখেছেন আওয়ামী–সমর্থিত প্রার্থীরা। অধিকাংশ সময় জয়লাভ করেন মুসলিম লীগ ও বিএনপির ঘরোনার প্রার্থীরা।

ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশ বিভাগের পর থেকে সাতক্ষীরা পৌরসভার চেয়ারম্যান ও মেয়র পদে মাত্র দুইবার জয়ের মুখ দেখেছেন আওয়ামী–সমর্থিত প্রার্থীরা। অধিকাংশ সময় জয়লাভ করেন মুসলিম লীগ ও বিএনপির ঘরোনার প্রার্থীরা। এ কারণে বিএনপি–সমর্থক, নেতা-কর্মী মনে করেন, এবারও তাঁদের প্রার্থী জয়লাভ করবেন।

তবে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক মঞ্চের সভাপতি আইনজীবি ফাইমুল হক মনে করেন, অন্যবারের নির্বাচন আর এবারের নির্বাচন এক নয়। এবার বিএনপি প্রার্থী বেকাদায় রয়েছেন। তাঁর মতে, বিএনপি ও জামায়াতের ভোট মিলে এখানে বিএনপির মেয়র নির্বাচিত হয়ে থাকে। এবার বিএনপির তাসকিন আহমেদ, জামায়াতের নুরুল হুদা ও জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাসিম ফারুক একই ঘরোনার প্রার্থী। তিনজনই সমানে সামনে লড়ছেন। ২০১৫ সালে কোন্দলে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আশানুরূপ ফল পাননি। সে ক্ষেত্রে এবারের আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ নাসেরুল হক একজন স্বচ্ছ ইমেজের মানুষ। স্থানীয় আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মী ও সমর্থক কাজ করছেন তাঁর পক্ষে। ফলে তিনি কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন।

বিএনপির প্রার্থী তাসকিন আহমেদ বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ এখন পর্যন্ত ভালো রয়েছে। কোথাও কোনো ধরনের ঝামেলা নেই। এমন পরিবেশ থাকলে ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জয় লাভ করবেন বলে তিনি আশাবাদী।

পৌরসভায় রাস্তাঘাট চলাচলের অনুপযোগী। খাওয়ার পানির একই অবস্থা। কোনো উন্নতি নেই। মানুষ পরিবর্তন চায়। পাঁচ বছর ধরে তিনি মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছেন। তাঁদের সুখ-দুঃখের সাথি হয়েছেন।
নাসিম ফারুক খান, স্বতন্ত্র প্রার্থী

স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসিম ফারুক খান বলছেন, পৌরসভায় রাস্তাঘাট চলাচলের অনুপযোগী। খাওয়ার পানির একই অবস্থা। কোনো উন্নতি নেই। মানুষ পরিবর্তন চায়। পাঁচ বছর ধরে তিনি মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছেন। তাঁদের সুখ-দুঃখের সাথি হয়েছেন। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলে তিনি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শেখ নাসেরুল হক বলেন, দলীয় নেতা-কর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষ তাঁর পক্ষে রয়েছেন। তাঁর বাবা শেখ আশরাফুল হক দুইবার মেয়র থাকার কারণে জনগণের সুখ-দুঃখে তিনি ও তাঁর পরিবার ছিল। গত পাঁচ বছর নানাভাবে মানুষের পাশে থেকেছেন তিনি। যেভাবে চলছে, সব ঠিকঠাক থাকলে তিনিই জয় লাভ করবেন।

ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী এস এম মুসতাফীজ-উর-রশিদ বলেন, তাঁর কিংবা তাঁদের দলের বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতি, অনিয়মের অভিযোগ নেই। ফলে জনগণ তাঁদের ভোট দিয়ে জয়ী করবেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল হুদা বলেন, শনিবার পর্যন্ত ভোটের পরিবেশ ভালো রয়েছে। পরিবেশ এমন থাকলে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যেতে পারলে ভোট শেষে তিনিই বিজয়ের হাসি হাসবেন।