সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সহকারীর অপসারণ চান দলিল লেখকেরা

ঢাকার কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ের অফিস সহকারী লায়লা আক্তারের বিরুদ্ধে মানববন্ধন। আজ রোববার সকালে রাজেন্দ্রপুর এলাকায়।
ছবি: প্রথম আলো

ঢাকার কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ের এক সহকারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ তুলে তাঁর অপসারণ দাবি করেছেন দলিল লেখকেরা। আজ রোববার তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে এই দাবি জানান।

ওই অফিস সহকারীর নাম লায়লা আক্তার। তিনি বলেছেন, ‘এই কার্যালয়ের বিভিন্ন অপকর্ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় একটি চক্র আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।’

লায়লা আক্তারের বিরুদ্ধে আজ বেলা ১১টার দিকে রাজেন্দ্রপুর এলাকায় কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন হয়। এতে শতাধিক দলিল লেখক ও ভেন্ডার অংশ নেন। ঘণ্টাখানেক মানববন্ধন করার পর তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। এরপর তাঁরা লায়লার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে সাবরেজিস্ট্রারের কাছে স্মারকলিপি দেন।

আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তাঁর (অফিস সহকারী) অপসারণ চাই। তাঁকে অপসারণ করা না হলে দলিল লেখকেরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কাজ বন্ধ রাখার আন্দোলনের ডাক দেব।
মোহাম্মদ আশ্রাফউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক, দলিল লেখক সমিতি

মানববন্ধন চলাকালে দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মো. মহিউদ্দিন বক্তব্য দেন।

মহিউদ্দিন বলেন, লায়লা আক্তার জমির দলিল ও কাগজপত্র নানা অজুহাতে আটকে রেখে প্রতিনিয়ত চাঁদা দাবি করেন। তাঁকে টাকা দিয়ে খুশি না করলে দলিল ও কাগজপত্র ছাড়েন না। অনেক সময় তাঁর কথামতো কাজ না করলে দলিল লেখকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। কথামতো টাকা না দিতে চাইলে তিনি দলিল লেখকদের লাইসেন্স বাতিলেরও হুমকি দেন। এসব অপকর্মের কথা সাবরেজিস্ট্রারসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কেউ তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি।

এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সাবরেজিস্ট্রার মৃত্যুঞ্জয় শিকারী প্রথম আলোকে বলেন, দলিল লেখকদের অভিযোগের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে।

ঢাকার কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ের অফিস সহকারী লায়লা আক্তারের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল। আজ রোববার সকালে রাজেন্দ্রপুর এলাকায়।
ছবি: প্রথম আলো

মানববন্ধনে দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আশ্রাফউদ্দিন বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘লায়লা আক্তারের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তিনি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। নানা অজুহাতে হয়রানি করেন। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তাঁর অপসারণ চাই। তাঁকে অপসারণ করা না হলে দলিল লেখকেরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কাজ বন্ধ রাখার আন্দোলনের ডাক দেব।’

সমিতির উপদেষ্টা মেজবাউদ্দিন বাবুল বলেন, লায়লা আক্তারের বিরুদ্ধে ঘুষ-বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। তিনি নিয়ম ভঙ্গ করে নির্ধারিত রেজিস্ট্রি ফি না নিয়ে ইচ্ছেমতো টাকা আদায় করে আত্মসাৎ করেন। এতে সরকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা তাঁকে এই সাবরেজিস্ট্রি কার্যালয়ে চাই না। অতিসত্বর তাঁকে বদলি করা হোক।’

জানতে চাইলে সাবরেজিস্ট্রার মৃত্যুঞ্জয় শিকারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কার্যালয়ে কেউ অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকলে এবং কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’