সাবেক মেয়রের বিরুদ্ধে বাড়ি দখলের অভিযোগ

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ছেন আবুল কালাম চৌধুরী। বুধবার সকালে আখাউড়া পৌর শহরের রাধানগরে
প্রথম আলো

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতার বিরুদ্ধে এক ব্যক্তির বাড়ি ভাড়া নিয়ে ২০ বছর ধরে দখল করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। আজ বুধবার আখাউড়া পৌর শহরের রাধানগরে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি করা হয়।

সকালে মো. আবুল কালাম চৌধুরী (৭২) নিজের বাড়িতে ওই সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে তাঁর স্ত্রী লূৎফুন্নাহার ও ছেলে মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. নূরুল হক ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে আরেকটি বাড়ি দখলের অভিযোগ তুলেছেন।

কালাম চৌধুরীর কাছ থেকে বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিলাম, সত্য। পরে জানতে পারি, বাড়িটি আবুল কালাম আজাদের নয়। জায়গাটি সরকারি অর্পিত সম্পত্তি। এটা জানার পর আমি জেলা পরিষদ থেকে জায়গাটি বন্দোবস্ত নিয়েছি।
মো. নূরুল হক ভূঁইয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক পৌর মেয়র, আখাউড়া

সংবাদ সম্মেলনে আবুল কালাম চৌধুরী লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান। এতে তিনি বলেন, ‘আমি রাধানগর মৌজার ২৯৩ দাগে বিএস ১৩১০ দাগে ক্রয়সূত্রে সাড়ে ৪ শতক জমির মালিক। বিএস ২০৪ নম্বর চূড়ান্ত খতিয়ানে আমার নামে এ জমি নিবন্ধিত। কেনার পর আমি এ জায়গায় টিনের ছাউনির পাকা চারচালা ঘর নির্মাণ করি। গত ২০০১ সালের ২৪ জানুয়ারি পৌরসভার তৎকালীন মেয়র নূরুল হক মাসিক ১ হাজার ২০০ টাকায় বাড়িটি ভাড়া নেন। পাঁচ-ছয় মাস টাকা দেওয়ার পর তিনি ভাড়া দেওয়া বন্ধ করেন।’

আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, ‘নূরুল হক দীর্ঘদিন ভাড়া না দেওয়ায় ২০০২ সালে সালিস বৈঠক হয়। সালিসে বকেয়া ভাড়া পরিশোধের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। এরপরও নূরুল হক ভাড়া দেননি। বরং তিনি নানা টালবাহানা করে প্রায় ২০ বছর ধরে আমার কোটি টাকা মূল্যের বাড়িটি দখল করে রেখেছেন। বাড়িটি ছাড়ার জন্য বারবার তাগাদা দিলেও তিনি ব্যক্তিগত বাহিনী ও দলের প্রভাব খাটিয়ে আমাকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। বর্তমানে আমি পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

সংবাদ সম্মেলনে আবুল কালাম আরও বলেন, ‘আমি বৃদ্ধ মানুষ। আমার পাঁচ ছেলেমেয়ে। এর মধ্যে দুই ছেলে ও এক মেয়ে শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। প্রতিবন্ধী এক ছেলে অর্থের অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে। বর্তমানে অর্থের অভাবে সংসারের ভরণপোষণসহ প্রতিবন্ধী দুই সন্তানের চিকিৎসার খরচ চালাতে পারছি না।’ তিনি বাড়িটি উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্থানীয় সাংসদ ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

জানতে চাইলে নূরুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘কালাম চৌধুরীর কাছ থেকে বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিলাম, সত্য। পরে জানতে পারি, বাড়িটি আবুল কালাম আজাদের নয়। জায়গাটি সরকারি অর্পিত সম্পত্তি। এটা জানার পর আমি জেলা পরিষদ থেকে জায়গাটি বন্দোবস্ত নিয়েছি। সেই সূত্রে আমি বাড়িটিতে বাস করছি। সরকারি কর, খাজনা পরিশোধ করে আসছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি আগামী পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। আমাকে ভোটারদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মদদে এ গুজব ছড়ানো হচ্ছে।’