সামাজিক বনায়নের দেড় শতাধিক গাছ কাটলেন আ.লীগ নেতা

নাটোরের সিংড়ার গোটিয়া এলাকায় রাস্তার দুই পাশের গাছ কেটে করাতকলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোতালেব হোসেনের বিরুদ্ধে এসব গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার বিকেলে তোলা
ছবি: মুক্তার হোসেন

নাটোরের সিংড়া উপজেলা চামারী ইউনিয়নের গোটিয়া এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তার দুই পাশের দেড় শতাধিক গাছ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোতালেব হোসেন কেটে ফেলেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রশাসনের কাছে এসব গাছ কাটার অনুমতি নেওয়ারও প্রয়োজন মনে করেননি তিনি।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বন বিভাগের সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির আওতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) চামারী ইউনিয়নের গোটিয়া কাঁচা রাস্তার দুই ধারে লাগানো হয় দুই শতাধিক ইউক্যালিপটাসগাছ। গাছগুলো ইতিমধ্যে ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি ব্যাসের পুরো হয়েছে। হঠাৎ গাছগুলোর ওপর নজর পড়ে সিংড়া শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতালেব হোসেনের। চার দিন ধরে তিনি কাউকে না বলেই শ্রমিকদের দিয়ে একের পর এক গাছ কাটছেন। দিন শেষে তা ভ্যানে তুলে করাতকলে নিয়ে যাচ্ছেন।

বুধবার গোটিয়া কাঁচা রাস্তা ঘুরে দেখা যায়, রাস্তার দুই পাশের অন্তত দেড় শতাধিক গাছের গোড়া পড়ে আছে। আটজন শ্রমিক তখনো গাছ কাটছিলেন। দুজন ভ্যানে করে কাটা গাছ করাতকলে নিয়ে যাচ্ছিলেন।

গাছ বহনকারী ভ্যানচালক আলী হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা মোতালেব হোসেন গাছগুলো কেটে বিক্রি করছেন। তাঁরা শুধু গাছগুলো বহন করে স মিলে নিয়ে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোতালেব হোসেনের দাবি, গাছগুলো তাঁরাই সরকারি রাস্তার পাশের জমিতে লাগিয়েছিলেন। প্রয়োজন হওয়ায় তাঁরা গাছগুলো কেটে নিচ্ছেন। সরকারি রাস্তার পাশের গাছ কাটতে পারেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অত কিছু বুঝি না, আমরা লাগাইছি, আমরা কেটে নিচ্ছি।’ গাছ কাটার জন্য প্রশাসনের অনুমতি আছে কি না, জানতে চাইলে মোতালেব হোসেন বলেন, ‘কাউকে জানানোর প্রয়োজন মনে করিনি।’

চামারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রশিদুল ইসলাম বলেন, সামাজিক বনায়নের গাছ অন্য কারও কাটার সুযোগ নেই। তিনি কীভাবে গাছগুলো কাটছেন, তা তাঁর জানা নেই।

সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সামিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি গাছ কাটার অভিযোগ পেয়ে লোক পাঠিয়েছিলাম। গাছ যেই লাগাক সড়কের মধ্যে বা সড়কের জায়গায় পড়লে তা সড়কের। এ গাছ কেউ কাটতে পারবে না। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’