সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, সমাবেশ

সারা দেশে সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি। আজ শনিবার টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার মোখতার ফোয়ারা চত্বরে
ছবি: প্রথম আলো

সারা দেশে হিন্দুদের বাড়ি, মন্দির ও মণ্ডপে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র মোখতার ফোয়ারা চত্বরে এসব কর্মসূচি পালিত হয়।

ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ-সমাবেশ চলার সময় ঢাকা-সাগরদিঘী সড়কের দুই পাশে শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে। ফলে যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন। উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদসহ সনাতন হিন্দুধর্মাবলম্বীর অন্তত ১০টি সংগঠনের শতাধিক সদস্য এ কর্মসূচিতে যোগ দেন।

মানববন্ধন ও সমাবেশে উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নরেশ চন্দ্র সরকার সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এ ঘটনার নেপথ্যের কারিগরদের চিহ্নিত ও গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, যদি হিন্দু সম্প্রদায়ের কেউ এর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে, তবে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

বাংলাদেশ কোচ আদিবাসী সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রমেশ কোচ বলেন, ‘আমরা ধর্মের মূল বিষয়টা না জেনেই নানান রকম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় জড়িয়ে পড়ছি এবং নির্যাতিত-নিপীড়িত হচ্ছি। স্বাধীন দেশে ধর্মনিরপেক্ষভাবে বাঁচার ও মিলেমিশে থাকার কথা ছিল, কিন্তু তা আজ বিনষ্ট হয়েছে। কুমিল্লার একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে সারা দেশে বিভিন্ন জায়গায় ঘটা দাঙ্গার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

মানববন্ধনে ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রবীন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই দেশে ধর্মনিরপেক্ষতার বীজ বপন করেছিলেন। যেটা এখন আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান—এসব পরিচয়ের থেকেও আমাদের বড় পরিচয় হচ্ছে আমরা মানুষ। আমরা সনাতন ধর্মাবলম্বী যারা আছি, তারা ১৯৪৭-এর দেশভাগের সময় দেশ ত্যাগ করিনি, মুক্তিযুদ্ধের সময়ও দেশ ছেড়ে যাইনি। তার অর্থ এই যে আমরা এই দেশেই থাকতে চাই। তাহলে কেন আমাদের সঙ্গে এমনটা হচ্ছে। কেনই বা আমাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জুলফিকার হায়দার কামাল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আতিকুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম খান প্রমুখ বক্তব্য উপস্থাপন করেন।