সার কারখানার তরল বর্জ্যে ২ মাস ধরে জলাবদ্ধ বিদ্যালয়ের মাঠ
যমুনা সার কারখানার বিষাক্ত তরল বর্জ্য বৃষ্টির পানির সঙ্গে জামালপুরের সরিষাবাড়ীর পোগলদিঘা ইউনিয়নের দুটি সরকারি বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে জমে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। দুই মাস ধরে জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষার্থীরা মাঠে খেলাধুলা করতে পারছে না। বর্জ্যের দুর্গন্ধে ব্যাহত হচ্ছে শ্রেণিকক্ষের পাঠদান।
ইউনিয়নের পোগলদিঘা উচ্চবিদ্যালয় ও পোগলদিঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মিলিয়ে একটি খেলার মাঠ। প্রতিষ্ঠান দুটির শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খেলার মাঠটি নিচু। পূর্ব পাশে যমুনা সার কারখানা। সেখান থেকে পাইপ দিয়ে বাইরে ফেলা হয় বিষাক্ত তরল বর্জ্য। যা বৃষ্টির পানির সঙ্গে এসে জমেছে বিদ্যালয়ের মাঠে। এতে দুর্ভোগে পরতে হচ্ছে দুটি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৮০০ শিক্ষার্থীকে।
সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের তারাকান্দিতে অবস্থিত যমুনা সার কারখানা কোম্পানি লিমিটেড। শিক্ষকেরা জানান, সার কারখানা থেকে যখন অ্যামোনিয়া গ্যাস ছেড়ে দেওয়া হয়, তখন বিদ্যালয় দুটির পাঠদান বন্ধ হয়ে যায়। বছরে দুবার কারখানা থেকে অ্যামোনিয়া গ্যাস ছেড়ে দেওয়া হয়।
দীর্ঘদিনের এ সমস্যা নিরসনে গত শনিবার বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থী-শিক্ষকেরা। তাঁরা বিদ্যালয়ের মাঠ উঁচু করার দাবি জানান।
পোঘলদিঘা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাজমুল হোসেন জানায়, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয় মাঠে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। মাঠে তারা খেলাধুলা করতে পারে না। এ ছাড়া কারখানার গ্যাসের কারণে ক্লাসও ঠিকমতো হয় না। কারখানা থেকে গ্যাস ছাড়লে শ্বাসকষ্ট হয়।
পোগলদিঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বজলুর রশিদ জানান, মাঠটি নিচু হওয়ায় বছরের ছয় মাস পানি জমে থাকে। বিষাক্ত বর্জ্যমিশ্রিত পানি মাড়িয়ে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ঢুকতে হয়।
পোগলদিঘা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরওয়ার হোসেন তরফদার জানান, কারখানা থেকে গ্যাস ছাড়লে বিদ্যালয় ছুটি দেওয়া হয়। বিদ্যালয়ের মাঠ উঁচু না করলে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জনেরও হুমকি দিয়েছে।
এ বিষয়ে যমুনা সার কারখানার মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মঈনুল হক জানান, অ্যামোনিয়া উৎপাদনের সময় কিছুটা গ্যাস বাইরে চলে যায়। এত বড় কারখানা, আশপাশে একটু ক্ষতি হবেই। অ্যামোনিয়া গ্যাস শোধনাগারের জন্য কারখানার তিন একর জমিতে লেগুন নির্মাণ করা হবে। এটি হলেই মাঠে পানি জমে থাকবে না। ভূমি অধিগ্রহণ হলেই লেগুন নির্মাণের কাজ শুরু হবে।
এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপমা ফারিসা প্রথম আলোকে জানান, মাঠটি উঁচু করতে শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।