সারিয়াকান্দিতে যমুনার পানি বাড়ার সঙ্গে তীব্র হচ্ছে ভাঙন

যমুনার ভাঙনে দুই দফা বসতবাড়ি ভেঙে গেছে মাজেদ–আকলিমা দম্পত্তির। এখন নতুন করে উঁচু স্থানে ঘর নির্মাণের জন্য চর থেকে মাটি নিয়ে যাচ্ছেন। গতকাল শনিবার বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার মানিকদাইড় চরে। ছবি: সোয়েল রানা
যমুনার ভাঙনে দুই দফা বসতবাড়ি ভেঙে গেছে মাজেদ–আকলিমা দম্পত্তির। এখন নতুন করে উঁচু স্থানে ঘর নির্মাণের জন্য চর থেকে মাটি নিয়ে যাচ্ছেন। গতকাল শনিবার বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার মানিকদাইড় চরে। ছবি: সোয়েল রানা

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় যমুনা নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তীব্র হচ্ছে ভাঙন। ভাঙনে বিলীন হচ্ছে একের পর এক লোকালয়। প্রবল নদীভাঙনে বসতভিটা, আবাদি জমি ও ফসল হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন নদীতীরবর্তী এলাকার লোকজন। নদীভাঙন আর যমুনার প্লাবনে দিশেহারা চরাঞ্চলের হাজারো মানুষ।

রোববার সারিয়াকান্দি উপজেলার চালুয়াবাড়ি ইউনিয়নের যমুনা নদীর দুর্গম আউচারপাড়া, সুজনেরপাড়া, উত্তর শিমুলতাইড়, শিমুলতাইড়, বিরামের পাঁচগাছি, মোহনপুর, ফাজিলপুর, কাশিরপাড়াসহ আটটি চর ঘুরে নদীভাঙনের তাণ্ডবচিত্র দেখা গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সারিয়াকান্দির মথুরাপাড়া পয়েন্টে যমুনা নদীর বিপৎসীমা ধরা হয় ১৬ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার। শনিবার সন্ধ্যা ছয়টায় যমুনা নদীর পানি প্রবাহিত হয়েছে ১৬ দশমিক ৬৩ সেন্টিমিটার, অর্থাৎ বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে। ২৪ ঘণ্টায় পানি বেড়ে রোববার সন্ধ্যা ছয়টায় ১৬ দশমিক ৮৯ সেন্টিমিটার, অর্থাৎ বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

যমুনায় পানি বৃদ্ধি ও ভাঙনে মানুষ দিশেহারা হলেও বন্যা পরিস্থিতি রোববার পর্যন্ত অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানিয়েছে বগুড়া জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখা। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজাহার আলী মণ্ডল জানিয়েছেন, রোববার পর্যন্ত জেলার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের ৯৮টি গ্রামের ৭৭ হাজার ৬২০ জন পানিবন্দী রয়েছেন। দুর্গত পরিবারের সংখ্যা ১৯ হাজার ৭২।

জানা গেছে, বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধে, চরের শুকনা জায়গায়, অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছে বানভাসি হাজারো মানুষ। পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে কৃষকের ৮ হাজার ৭৫৪ হেক্টর জমির পাট-ধান, বীজতলাসহ আবাদি জমি।