সাড়ে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন দুই শিক্ষকনেতা

দুই শিক্ষকনেতার বিরুদ্ধে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী তিন নারী। সোমবার দুপুরে জয়পুরহাট প্রেসক্লাবে।
প্রথম আলো

বিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তিন নারীর কাছে থেকে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল ও পাঁচবিবি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির দুই নেতার বিরুদ্ধে।

আজ সোমবার জয়পুরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ভুক্তভোগী তিন নারী এ অভিযোগ করেন। অভিযুক্ত দুই নেতা হলেন ক্ষেতলাল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ওয়াদুদ ফাররোখ ও পাঁচবিবির সাধারণ সম্পাদক আমানউল্লাহ।

অভিযোগকারীরা হলেন আক্কেলপুরের কাশিড়া লক্ষ্মীভিটা গ্রামের আলেয়া বেগম, শারমিন আক্তার ও সদরের জয়পার্বতীপুর দক্ষিণ কান্দি গ্রামের নুরুন নাহার। এর আগে গত ৩১ মে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন তাঁরা।  

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পড়ে শোনান শারমিন আক্তার। তিনি বলেন, ২০১৭ সালে প্রাক্‌–প্রাথমিক শিশু কল্যাণ বিদ্যালয়ে চাকরির কথা বলে দুই শিক্ষকনেতা ওয়াদুদ ফাররোখ ও আমানউল্লাহ তাঁদের তিনজনের কাছে থেকে ৬ লাখ টাকা করে চান। এরপর শারমিন আক্তার দেড় লাখ, নুরুন নাহার আড়াই লাখ ও আলেয়া বেগম দেড় লাখ টাকা দেন।

এরপর দুই শিক্ষকনেতা মিলে আক্কেলপুর মুজিবুর রহমান কলেজের পেছনে একটি ভবন ভাড়া নিয়ে সেখানে বিদ্যালয় চালু করেন। বিদ্যালয় ভবনের ভাড়া হিসেবে মাসিক ছয় হাজার করে টাকা দুই শিক্ষকনেতার দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেড় বছর ধরে স্কুল ভবনের ভাড়ার টাকা ভুক্তভোগীদের বহন করতে হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে শিক্ষকনেতারা তাঁদের চাকরি দেব-দিচ্ছি বলে টালবাহানা শুরু করেন। দীর্ঘদিনেও চাকরি না হওয়ায় টাকাও ফেরত দেননি। টাকা চাওয়ায় এখন তাঁদের হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে।

শারমিন আক্তার অভিযোগ করেন, চাকরি দেওয়ার কথা বলে ওই দুই শিক্ষকনেতা আরও অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। কিন্তু কাউকে চাকরি দেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে তাঁরা তিনজন পৃথকভাবে গত ৩১ মে জয়পুরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।

আলেয়া বেগম বলেন, সরকারি চাকরি পাওয়ার আশায় জমি বন্ধক রেখে টাকা দিয়েছিলেন। এখন টাকা ফেরত চাইতে গেলে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে।

অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে মুঠোফোনে শিক্ষকনেতা আমানউল্লাহ বলেন, ‘শুধু আমাদের জেলায় প্রাক্‌–প্রাথমিক শিশু কল্যাণ স্কুল অনুমোদন পায়নি। আমি চাকরি দেওয়ার জন্য একজনের কাছে টাকা নিয়েছিলাম, তাঁকে টাকা ফেরতও দিয়েছি। অন্যদের কাছে থেকে ক্ষেতলালের ওয়াদুদ ফাররোখ টাকা নিয়েছেন।’

ওয়াদুদ ফাররোখের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে সংযোগ কেটে দেন। জয়পুরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম তৌফিকুজ্জামান বলেন, ‘পাঁচবিবি ও ক্ষেতলালের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। দুই উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।’