সিরাজগঞ্জে মহাসড়কে চাপ আছে, যানজট নেই
ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে হিসাবরক্ষক হিসেবে কাজ করেন আবু হেনা। স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে তিনি ট্রাকে করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাচ্ছেন সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার তামাই গ্রামে।
আজ সোমবার বেলা পৌনে একটার দিকে তাঁর সঙ্গে কথা হয় সিরাজগঞ্জের কড্ডার মোড় এলাকায়। আবু হেনা বলেন, বছরের একটা ঈদের দিন। সেই দিনে পরিবারের সঙ্গে ঈদে আনন্দ করতে পারব না, তা কী হয়। গত বছরও করোনার কারণে ঠিকমতো ঈদ করতে পারেননি। এবারও একই অবস্থা। তাই বাধ্য হয়ে একটু ঝুঁকি নিয়েই বাড়ি ফিরছেন।
অন্য বছরগুলোর মতো এবারও ঘরমুখী হাজারো মানুষ বেশি ভাড়ায় গন্তব্যে ছুটছেন। ঘরমুখী মানুষের একটি বড় অংশ মাইক্রোবাসে করে যাচ্ছেন। অনেকে ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানেও যাচ্ছেন। সিরাজগঞ্জ-বগুড়া-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বিভিন্ন যানবাহনের চাপ থাকলেও যানজট দেখা যায়নি।
গাইবান্ধাগামী পিকআপ ভ্যানের যাত্রী আবু সামা ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদ মোড় এলাকায় তাঁর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, অল্প কয়েক দিনের ছুটি পেয়েছেন তিনি। তাই বিধিনিষেধ থাকলেও পিকআপে করেই বাড়ি যাচ্ছেন ঈদ করতে। ঢাকা থেকে গাইবান্ধার ভাড়া দিতে হয়েছে ৪০০ টাকা।
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত স্বপন শেখ। তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষে মানিকগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন তিনি। উল্লাপাড়া থেকে লোকাল বাসে করে কড্ডার মোড়ে এসেছেন। এখান থেকে মোটরসাইকেলে করে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হবেন। এরপর সেতুর পূর্ব প্রান্তে গিয়ে কোনোভাবে মোটরসাইকেল অথবা ট্রাকে করে বাড়ি ফিরবেন। এভাবে ভেঙে ভেঙে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার মানসিকতা নিয়েই রাস্তায় নেমেছেন তিনি।
স্বপন শেখের মতো অনেকেই সরাসরি বাস না পেয়ে ভেঙে ভেঙে বিভিন্ন পরিবহনের মাধ্যমে বাড়ি ফেরার মানসিকতা নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন যাত্রীরা।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম বলেন, ২৪ ঘণ্টায় মহাসড়কে ৩১ হাজার ৮০২টি যানবাহন চলাচল করেছে। আজ বিকেল থেকে এসব যানবাহনের চাপ কিছুটা বাড়ার আশঙ্কা আছে। এ বিষয়ে জেলা পুলিশের ব্যাপক প্রস্তুতি আছে। মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় ৯ মে সকাল থেকে ৪১০ পুলিশ সদস্য তিনটি পালায় কাজ করছেন। বর্তমানে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। উত্তরবঙ্গগামী ঘরমুখী মানুষের চাপে মহাসড়কে অন্যান্য পরিবহন বেশি থাকলেও সঠিকভাবে নিয়ম মেনে চলাচল করায় কোনো ধরনের যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে না।