সিল মারা নিয়ে সংঘর্ষের পর কটিয়াদীতে এক কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ বাতিল

সংঘর্ষের সময় বুথের নির্বাচনী সরঞ্জাম ভাঙচুর করা হয়। রোববার কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীর জালালপুর ইউনিয়নের চর পুখিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে
ছবি: সংগৃহীত

হামলা চালিয়ে নৌকা প্রতীকে প্রকাশ্যে সিল মারার ঘটনায় কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলায় ইউপি নির্বাচনের একটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ বাতিল করা হয়েছে। এর আগে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হলে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের উত্তর চর পুখিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুপুরে দ্বিতীয় দফায় সংঘর্ষ বাধলে বেলা একটার পর ভোট গ্রহণ বাতিল করেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মাসুদুল হক। পরে তিনি বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।

চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে দ্বিতীয় দফার সংঘর্ষ প্রায় আধা ঘণ্টা স্থায়ী হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ফাঁকা গুলি ছোড়ে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী খালেক সরকার এবং বিদ্রোহী প্রার্থী হাবিবুর রহমান। রোববার সকাল সাড়ে আটটার দিকে প্রথমে নৌকার সমর্থকেরা লাঠিসোঁটা নিয়ে কেন্দ্রে হামলা চালান। পরে বুথে গিয়ে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে প্রকাশ্যে সিল মারতে থাকেন। হাবিবুর রহমানের সমর্থকেরা প্রতিরোধ শুরু করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তখন ভোট গ্রহণও বন্ধ থাকে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আবার ভোট শুরু হলেও উত্তেজনা কমেনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ সময় আবারও প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারা হচ্ছে—এমন খবর কেন্দ্রের বাইরে ছড়িয়ে পড়ে। তখন বিদ্রোহী প্রার্থী হাবিবুর রহমান কেন্দ্রে এসে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাছে ভোট গ্রহণ বাতিলের দাবি তোলেন। কিন্তু প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বাতিল করতে রাজি হননি। নৌকার সমর্থকেরাও বাতিলের বিপক্ষে অবস্থান নেন। হাবিবুর রহমান কেন্দ্রে আসার পর নৌকার সমর্থকেরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তখন আবার দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।

বিদ্রোহী প্রার্থী হাবিবুর রহমান বলেন, কেন্দ্র দখলে নিয়ে প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকে সিল মারার পর প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি না নিয়েই আবার ভোট গ্রহণ শুরু করা হয়। এতে নৌকার লাভ হলেও তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হন। এ সত্য বলতে গিয়ে প্রথমে তিনি হামলার শিকার হন। ফলে পরিস্থিতি আর নিয়ন্ত্রণে থাকেনি।

নৌকার প্রার্থী খালেক সরকার বলেন, তাঁর নিশ্চিত জয়ে বাধা সৃষ্টি করতেই পরিকল্পিতভাবে দুই দফায় কেন্দ্রটিতে সমস্যার সৃষ্টি করেন বিদ্রোহী প্রার্থীরা। ভোট বাতিল হওয়ায় তাঁরা সফলও হয়েছেন। কিন্তু তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এতে।