সিলেট নগর সকালে ফাঁকা, বিকেলে দোকানে ভিড়
করোনার সংক্রমণরোধে দেশব্যাপী সাত দিনের সর্বাত্মক লকডাউনের প্রথম দিনে আজ বুধবার সকালের দিকে ফাঁকা ছিল সিলেট নগর। নগরের অভ্যন্তরে ও কিংবা দূরপাল্লার কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে থাকে। বিকেল চারটার পর নগরে ইফতারি বিক্রয়কারী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে জনসমাগম ঘটে।
সকাল ও বিকেলে সিলেট নগরের ব্যস্ততম বন্দর বাজার, আম্বরখানা, চৌহাট্টা, রিকাবিবাজার, জিন্দাবাজার, মেডিকেল, মদিনা মার্কেট, পাঠানটুলা এলাকাসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন ভিন্ন চিত্র।
সকালে সড়কে তেমন যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। তবে বিকেলের দিকে নগরের অভ্যন্তরে মোটরসাইকেল ও রিকশার আধিক্য লক্ষ করা যায়। সকাল থেকে সড়কগুলোর মোড়ে মোড়ে পুলিশ সদস্যদের নিরাপত্তার দায়িত্বে দেখা গেলেও বিকেলের দিকে এসব স্থানে তাঁদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়নি।
সকালে মোটরসাইকেল, রিকশা বা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বের হওয়া অনেকেই পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েন। অহেতুক বাইরে আসায় অনেকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া বের হওয়ায় অনেককে যানবাহন থেকে নামিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পথে বের হওয়া মানুষজনকে মাস্ক সরবরাহ করতেও দেখা গেছে পুলিশ সদস্যদের।
এদিকে বিকেল পাঁচটার দিকে নগরের জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা, বন্দরবাজার, রিকাবীবাজার এলাকায় দু-একজন পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। অন্যপাশে ইফতারি বিক্রি করা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছিল মানুষের ভিড়। এর মধ্যে বেশি ভিড় লক্ষ করা গেছে আম্বরখানা মোড় এলাকায়। ওই এলাকার শরিফ বেকারি, ফয়েজ স্ন্যাকস, ফুড কিং, বিসমিল্লাহ সুইট অ্যান্ড ফাস্ট ফুডের সামনে ছিল ক্রেতাদের দীর্ঘ সারি। এ সময় স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্ব মেনে চলেননি অনেকে। ক্রেতাদের গা ঘেঁষাঘেঁষি করে ইফতারসামগ্রী কিনতে দেখা যায়। ভিড়ের মধ্যেও অনেকের মুখে মাস্ক ছিল না।
জিলাপি কিনতে আসা নগরে আম্বরখানার বাসিন্দা ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, ‘রোজার ইফতারিতে জিলাপি অত্যন্ত পছন্দের খাবার। এ জন্য জিলাপি কিনতে এসেছি। ভিড়ের মধ্যে কিছুটা কষ্ট হলেও জিলাপি নিয়েই ঘরে ফিরব।’ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব না মানার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘ঘরে গিয়ে কাপড়-চোপড় বাইরে রেখে গোসল করে নেব।’
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) বি এম আশরাফ উল্যাহ বলেন, সরকারঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউন সফল করতে মানুষকে ঘরে থাকায় উদ্বুদ্ধ করতে মাঠে দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশের সদস্যরা। সাধারণ মানুষ যাতে লকডাউনে অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের না হন, সে ব্যাপারে কঠোরভাবে সতর্ক রয়েছে পুলিশ।
আশরাফ উল্যাহ আরও বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল বিক্রি করা প্রতিষ্ঠান ও রেস্তোরাঁগুলোর জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। রেস্তোরাঁর ভেতরে খাবার পরিবেশন করা যাবে না। ক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাইরে থেকেই সরবরাহ করা যাবে। নির্দেশনা ভঙ্গ করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।