সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রথম পরীক্ষা শুরু শনিবার

সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

দীর্ঘ দাবির পর প্রতিষ্ঠা, স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার পর এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন প্রথম পরীক্ষা গ্রহণের মধ্য দিয়ে নতুন অভিযাত্রা শুরু করছে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (এসএমইউ)। আজ শনিবার শুরু হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রথম পরীক্ষা। একযোগে তিনটি নার্সিং কলেজে শুরু হচ্ছে প্রথম বর্ষ বিএসসি ইন পোস্ট বেসিক নার্সিং পরীক্ষা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তর জানায়, প্রথম বর্ষ বিএসসি ইন পোস্ট বেসিক নার্সিং পরীক্ষা ২০২০ সালের জুনে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে তা এ বছরের জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সিলেটের নর্থ ইস্ট নার্সিং কলেজ, বেগম রাবেয়া খাতুন চৌধুরী নার্সিং কলেজ ও আল-আমিন নার্সিং কলেজের প্রথম বর্ষের মোট ১৫০ জন শিক্ষার্থী নিজ নিজ কেন্দ্রে এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি অনুষদে ডিন নিয়োগের পাশাপাশি পরীক্ষা কমিটি গঠনের মাধ্যমে পরীক্ষক নিয়োগের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম পরীক্ষা গ্রহণ হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, দেশের চিকিৎসাক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা, গবেষণা ও সেবার মান এবং সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারণ ও উন্নয়নে জাতীয় সংসদে ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর অনুমোদন হয় সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১৮। ওই বছরের ২০ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মোর্শেদ আহমেদ চৌধুরী।

উপাচার্য নিয়োগের পর সিলেট নগরীর চৌহাট্টায় স্থাপিত অস্থায়ী কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের লক্ষ্যে নগরীর উপকণ্ঠে দক্ষিণ সুরমার গোয়ালগাঁও মৌজায় ৫০ দশমিক ২২ একর এবং হাজরাই মৌজার ৩০ দশমিক শূন্য ৯ একরসহ মোট ৮০ দশমিক ৩১ একর ভূমি অধিগ্রহণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের দপ্তর সূত্র জানায়, প্রথম ভর্তি পরীক্ষার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট গঠন করে দুটি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়া অন্য সব বিধিবদ্ধ কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াও শেষ পর্যায়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা, মাস্টার প্ল্যান, ফিজিবিলিটি স্টাডি তৈরি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই ডিপিপি একনেকে অনুমোদন হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য অবকাঠামো তৈরির কাজও শুরু হবে।

সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোর্শেদ আহমেদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই সিলেটবাসীর দাবি ছিল একটি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের। উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার সব রকম চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। এতে করে শুরু থেকেই চিকিৎসা শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা ও উদ্ভাবনের দ্বার উন্মোচন করবে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এই অগ্রযাত্রার অংশ হিসেবে গ্রহণ করা হচ্ছে প্রথম পরীক্ষা। এই অভিযাত্রাও একটি ঐতিহাসিক ক্ষণ।