সিলেটে আ.লীগের মিছিলে ঢিল, ককটেল বিস্ফোরণ, আটক ৫

হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালের প্রতিবাদে রোববার সকাল থেকেই সিলেটের বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। হরতাল সমর্থকারীদের সঙ্গে সরকার দলীয় নেতা-কর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। রোববার সিলেট নগরের বন্দরবাজার এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

সিলেটে আওয়ামী লীগের হরতালবিরোধী মিছিলে ঢিল ছোড়ার ঘটনায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় একজন শ্রমিক ছুরিকাহত ও মারধরে আরও চারজন আহত হয়েছেন। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলাকালে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। একপর্যায়ে পুলিশ আওয়ামী লীগের মিছিলে ঢিল ছোড়ার অভিযোগে ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনকে আটক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

আজ রোববার দুপুর ১২টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত নগরের বন্দরবাজার ও মহাজনপট্টি এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে, আওয়ামী লীগের মিছিলে ঢিল ছুড়েছে হরতালে পিকেটিংয়ে থাকা ছাত্রশিবিরের একদল কর্মী। আটক পাঁচজনই শিবির কর্মী।

তবে মহাজনপট্টি এলাকার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, হরতালের পিকেটিং শেষে কয়েকজন শ্রমিকের ওপর অতর্কিত হামলা করা হয়। একজন শ্রমিক ছুরিকাহত হওয়ার ঘটনায় এ নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। একপর্যায়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পাঁচজনকে আটক করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

হরতাল সমর্থকারীদের সঙ্গে সরকার দলীয় নেতা-কর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। রোববার সিলেট নগরের বন্দরবাজার এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আবু ফরহাদ প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে আটক পাঁচজনই শিবির কর্মী। তাঁরা হেফাজতের হরতালে পিকেটিং করছিলেন। আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ আব্বাছ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পূর্বঘোষণা অনুযায়ী দুপুর ১২টার দিকে সিলেট জেলা পরিষদের সামনে থেকে আওয়ামী লীগ হরতালবিরোধী মিছিল করে। মিছিলটি বন্দরবাজার পেরিয়ে মহাজনপট্টি এলাকায় গেলে একটি ইটের ঢিল কে বা কারা ছোড়ে। এতে মিছিল থেকে এক পক্ষ ধাওয়া করে মহাজনপট্টি ও কালীঘাট এলাকায় যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মিছিলে ঢিল নিক্ষেপকারীদের আটক করে।

প্রত্যক্ষদর্শী কালীঘাট ও মহাজনপট্টির কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, নগরের অন্যতম ব্যবসায়িক এলাকা হওয়ায় প্রতিটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে কাজ করছিলেন শ্রমিকেরা। এ সময় আওয়ামী লীগের মিছিল থেকে শ্রমিকদের ধাওয়া করা হয়। একটি চালের দোকানে কর্মরত এক শ্রমিক ছুরিকাহত হলে ক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা সংগঠিত হলে তাঁদের হরতালের পিকেটার হিসেবে আওয়ামী লীগের মিছিল থেকে ধাওয়া করা হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পাঁচজনকে আটক করে নিয়ে যায়। এর আগে মিছিল থেকে ১০-১৫টি ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছে।


‘রাজপথেই মৌলবাদীদের বিষদাঁত ভেঙে দেওয়া হবে’

রাজপথেই মৌলবাদীদের বিষদাঁত ভেঙে দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিরউদ্দিন খান। আজ দুপুরে হরতালবিরোধী মিছিল শেষে সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, তথাকথিত হরতাল ও সহিংস কর্মসূচি ঠেকাতে রাজপথে থাকবে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ। দেশের শান্তিশৃঙ্খলা বিনষ্ট করতে হেফাজত, জামায়াত-শিবির ও বিএনপি উঠেপড়ে লেগেছে। যারা জ্বালাও পোড়াও, দোকানপাট ভাঙচুর করে, তারা দেশের মানুষের শান্তি চায় না। এদের প্রতিহত করতে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। সেই সঙ্গে হরতাল ও সহিংসতা প্রতিরোধে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ সব সময় মাঠে থাকবে, রাজপথেই মৌলবাদীদের বিষদাঁত ভেঙে দেওয়া হবে।

হেফাজত ইসলামের ডাকা হরতালের প্রতিবাদে বিক্ষোভ-মিছিল করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। রোববার সিলেট নগরের কোর্ট পয়েন্ট এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

সমাবেশের আগে নগরে সুরমা মার্কেট পয়েন্ট থেকে মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি কোর্ট পয়েন্ট, বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কামরান চত্বরে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে সাধারণ সম্পাদক নাসিরউদ্দিন খান ছাড়াও সহসভাপতি সুজাত আলী রফিক, জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফছর আজিজ, জেলা তাঁতী লীগের সভাপতি আলমগীর হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদ বক্তৃতা করেন।