সিলেটে পশুর হাটে ক্রেতা কম, দাম বেশি

গরু নিয়ে হাটে এসেছেন এক বিক্রেতা। বুধবার দুপুরে সিলেট নগরের কাজিরবাজার পশুর হাটে
ছবি: প্রথম আলো

সিলেটে কোরবানির পশুর হাটে ক্রেতাদের উপস্থিতি কম। বাজারে মাঝারি থেকে শুরু করে বড় গরু দেখা গেলেও বিক্রেতারা দাম বেশি হাঁকছেন বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।

তবে বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে এখন সব ধরনের পণ্যের দাম বেশি। গরুর খাবার কাঁচা ঘাস, ভুসি, খৈল, খড় এমনকি লবণের দামও বেড়েছে। সব কিছু বিবেচনায় দাম ঠিক আছে।

আজ বুধবার দুপুরে প্রায় তিন ঘণ্টা সিলেট নগরের কাজিরবাজার পশুর হাটে ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন পরিস্থিতির কথা জানা যায়।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিক্রেতারা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে গরু নিয়ে হাটে আসছেন। ঈদের আর মাত্র চার দিন বাকি থাকলেও হাটে ক্রেতাদের তেমন সমাগম দেখা যায়নি। হাটে এখনো গরু বাঁধার জন্য খুঁটি গেড়ে বাঁশ বাঁধার কাজ করা হচ্ছে। হাটে গরু নিয়ে আসা বিক্রেতারা গরুর গোসল করানো, খাবার খাওয়ানোতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবার হাটে তোলা গরু নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে দর কষাকষি করতেও দেখা গেল।

বিক্রেতাদের ভাষ্য, এখনো বাজার জমেনি। বাজারে যাঁরা আসছেন, তাঁদের হাতে গোনা কয়েকজনই গরু কিনছেন। অনেকেই দামদর জিজ্ঞেস করতে আসছেন। আগামী শুক্র ও শনিবার কোরবানির পশুর হাট জমজমাট হবে বলে তাঁরা মনে করছেন।

সিলেটের ওসমানীননগর উপজেলার গোয়ালা বাজারের বাসিন্দা মতিন মিয়া গত সোমবার বাজারে ৩০টি গরু নিয়ে এসেছেন। প্রায় ৭০০ কেজির একটি গরু তিনি ২ লাখ ২০ হাজার টাকা দাম হাঁকছিলেন।

মতিন মিয়া বলেন, ৩০টি গরু মধ্যে ৪টি বিক্রি করতে পেরেছেন। হাটে ক্রেতাদের উপস্থিতি কম। আবার অনেকেই দামাদামি করে ফিরে যাচ্ছেন।

কুড়িগ্রাম থেকে ১৫টি গরু এনেছেন আক্তার আলী (৩৫)। তিনি বলেন, দামাদামি করছেন অনেকে, তবে সুবিধামতো না হওয়ায় গরু বিক্রি করেননি। আশা করছেন, ঈদের দুই দিন আগে সব গরু বিক্রি করতে পারবেন।

হাটের পশ্চিম পাশে মাঝারি আকারের গরুর দাম করছিলেন নগরের কাজলশাহ এলাকার বাসিন্দা জুবের আহমদ (৫২)। বিক্রেতা সোয়াব আলীর (৫৮) সঙ্গে দুটি মাঝারি আকারের গরুর দাম করছিলেন তিনি।

জুবের আহমদ বলেন, বিক্রেতারা যে দাম বলছেন গতবারের তুলনায় একেকটি গরু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা বেশি। গত বছর যে গরু ৫০ হাজার টাকায় কেনা গিয়েছিল, সেসব গরু বিক্রিতে ৭৫ থেকে ৮০ হাজার টাকার নিচে নামছেন না বিক্রেতারা। সামনে আরও কয়েক দিন সময় আছে, এই সময়ের মধ্যে দাম বাড়বে না কমবে বলা যাচ্ছে না।

বিক্রেতা সোয়াব আলী বলেন, ক্রেতারা শুধু শুধুই বলেন দাম বাড়তি। গরুর খাবার খৈল, ভুসি, খড়, ঘাসের দাম যে বেড়েছে, সেদিকে কেউ বলেন না। আগে যে ভুসির দাম ১ হাজার টাকা ছিল, তা এখন ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর কাঁচা ঘাস তো বন্যার প্রভাবে আরও পাওয়া যায় না। পাওয়া গেলেও দাম বেড়েছে দিগুণ।

বাজারে গরু দেখছিলেন কাজীটুলা এলাকার যুবক রুবেল ইসলাম। তিনি বলেন, বাজার ঘুরে গরুর দামদর জেনে যাচ্ছেন। বিক্রেতাদের দাম জিজ্ঞেস করলে বেশি দাম হাঁকছেন। এরপরও একটি ধারণা নেওয়া যাচ্ছে।