সিলেটে সওজের কর্মকর্তাদের পদত্যাগের পরামর্শ দিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সিলেট বিমানবন্দরের পাশে বাদাঘাট বাইপাস সড়কের চার লেনের কাজ ১২ বছর ধরে ঝুলিয়ে রাখায় ক্ষুব্ধ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পদত্যাগ করার পরামর্শ দিয়েছেন।
মন্ত্রী বলেছেন, ‘এই ব্যর্থতা আমাদের এবং যাঁরা রাস্তা ব্যবহার করছেন, তাঁদের জন্য এটা দুঃখের। আর যাঁরা এই কাজের দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদের জন্য লজ্জার। ১২ বছরে একটি রাস্তা করতে না পারার জন্য তাঁদের মাথা হেঁট হওয়া উচিত। লজ্জায় চাকরি ছেড়ে দেওয়া উচিত।’
আজ মঙ্গলবার সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভারত সরকারের উপহারের অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সিলেট-১ আসনের সাবেক সাংসদ ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১০ সালে বিমানবন্দর-বাদাঘাট বাইপাস সড়ক উন্নয়নের প্রকল্প গ্রহণ করেছিলেন জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘১২ বছর হলো, এখনো শেষ হয়নি কাজটি। ১২ বছরে ১২ কিলোমিটার রাস্তার কাজ হয়নি। এটা সংশ্লিষ্টদের জন্য লজ্জার।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী দক্ষিণ কোরিয়ার উন্নয়নের উদাহরণ টেনে বলেন, একটি প্রকল্পের জন্য একজনই প্রকল্প পরিচালক থাকবেন। এক ব্যক্তি একাধিক প্রকল্পের পরিচালক হবেন না। সময়মতো এই পরিচালক তাঁর প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারলে প্রমোটেড হবেন, আর ব্যর্থ হলে প্রয়োজনে তাঁকে চাকরি থেকে বের করে দেওয়া হবে। এই আইন বাস্তবায়নের ফলে দক্ষিণ কোরিয়া এখন মডেল। অথচ এটি একসময় বাংলাদেশের চেয়ে গরিব দেশ ছিল।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সিলেট নগরীর যানজট কমাতে বাইপাস সড়কটি প্রশস্ত করে নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন সিলেট-১ আসনের সাবেক সাংসদ হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী। একই আসনের সাংসদ হওয়ার পর সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১০ সালের ৪ আগস্ট বাইপাস সড়ক উন্নয়নের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন।
তখন উচ্চপর্যায়ের একটি দল নির্মাণকাজ পরিদর্শনে গিয়ে সড়কটি জাতীয় মহাসড়কের মানে নির্মাণের পরামর্শ দিলে উন্নয়নকাজ থেমে যায়। বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর সড়কটি নির্মাণে উদ্যোগী হন।
সওজের প্রকৌশল বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে, ১২ দশমিক ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি এখন চার লেনে উন্নীত করা হবে। এটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৫৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
সিলেট সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পরিকল্পনা কমিশনে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই এটির অনুমোদন হতে পারে।