সিলেটে সুরমা-কুশিয়ারার উৎসমুখে আবার পানি বাড়ছে

সুরমা নদীর সিলেট শহর পয়েন্ট।প্রথম আলো

সিলেটের দুই প্রধান নদী সুরমা ও কুশিয়ারার উৎসমুখে আবার পানি বাড়ছে। আজ শুক্রবার সকাল থেকে সুরমার কানাইঘাট পয়েন্ট ও বিকেল থেকে কুশিয়ারার জকিগঞ্জের অমলসিদ পয়েন্টে পানি বাড়ছে। একই সঙ্গে সিলেটের সীমান্ত নদী হিসেবে পরিচিত লোভা ও সারীর পানিও বাড়ছে। আজ দৈনিক পানির স্তর সম্পর্কিত তথ্যে এ কথা জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ শহীদুজ্জামান সরকার।

পাউবো সূত্র জানায়, সিলেটের প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারার পানি কমছিল প্রায় এক সপ্তাহ ধরে। এর মধ্যে গত মঙ্গল ও বুধবার সীমান্তের ওপারে ভারী বৃষ্টি হওয়ায় সুরমা নদীর উৎসমুখ এলাকায় পানি বাড়ে। তবে একই সময়ে কুশিয়ারার উৎসমুখ সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার অমলসিদে পানি কমছিল। শুক্রবার সকাল থেকে সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বাড়ছে। দুপুর ও সন্ধ্যায় আরও দুই দফা পরিমাপ অনুযায়ী সুরমায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সকালে স্থিতিশীল থাকলেও বিকেল থেকে কুশিয়ারার অমলসিদ পয়েন্টে পানি বাড়ছে।

পাউবোর দৈনিক পানির স্তর সম্পর্কিত তথ্য অনুযায়ী, আজ সকালে কুশিয়ারা নদীর উৎসমুখ অমলসিদ পয়েন্টে ১১ দশমিক ৬৬ মিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। দুপুরে বাড়েনি। তবে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যায় পানি বেড়ে ১২ দশমিক ৫৫ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। অমলসিদে পানির বিপৎসীমা ১৫ দশমিক ৪০ মিটার। অমলসিদে পানি বাড়লেও কমছিল শেওলা, শেরপুর ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে।

দুপুর ও সন্ধ্যায় আরও দুই দফা পরিমাপ অনুযায়ী সুরমায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সকালে স্থিতিশীল থাকলেও বিকেল থেকে কুশিয়ারার অমলসিদ পয়েন্টে পানি বাড়ছে।

সিলেটের কানাইঘাটের লোভাছড়া এলাকায় সুরমা নদীর সঙ্গে মিশেছে সীমান্ত নদী লোভা। পানি হ্রাস-বৃদ্ধির হিসাবে এ স্থানটি সুরমার উৎসমুখ হিসেবে পরিচিতি। সেখানে সকাল থেকে পানি বাড়ছিল। সকাল ৬টায় ৯ দশমিক ৪৫ মিটার থেকে পানি বেড়ে সন্ধ্যা ৬টায় ১০ দশমিক ২৫ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়। কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমার পানির বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৭৫ মিটার। সুরমার সিলেট শহর পয়েন্টে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পানি অপরিবর্তিত ছিল। বেলা ৩টায় ৭ দশমিক ৯৭ মিটার থেকে বেড়ে সন্ধ্যা ৬টায় ৮ দশমিক ৩৮ মিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়।

প্রধান দুই নদীর উৎসমুখ এলাকার মতো পানি বাড়ছে সীমান্ত নদী লোভায়। আজ সকালে ১০ দশমিক ১৩ মিটার থেকে পানি বেড়ে সন্ধ্যায় ১২ দশমিক ১৩ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সিলেটের জৈন্তাপুর দিয়ে প্রবহমান অপর সীমান্ত নদী সারীর পানি সকালে ৯ দশমিক ২ মিটার থেকে বেড়ে সন্ধ্যায় ৯ দশমিক ৩৪ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে একই সময়ে কোম্পানীগঞ্জের ধলাই নদে পানি বাড়ছে না। ধলাই নদটি বৃষ্টিপ্রবণ ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জির একটি ঝরনা থেকে বাংলাদেশে নেমে এসেছে।

সীমান্তের ওপারে ভারী বৃষ্টি হওয়ায় সুরমা-কুশিয়ারার উৎসমুখ ও দুটো সীমান্ত নদীর পানি বাড়ছে বলে জানিয়েছেন পাউবোর নদ-নদী পর্যবেক্ষকেরা। তাঁরা বলেন, বৃষ্টি কমলে, উজান থেকে ভাটির দিকে পানি গড়ালে নদী স্থিতিশীল আকার ধারণ করার সম্ভাবনা রয়েছে।