সুগন্ধা যেন পৌরসভার ময়লার এক ভাগাড়

সুগন্ধা নদীতে ময়লা ফেলছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার ঝালকাঠির মেঘনা পেট্রোলিয়াম ডিপো এলাকায়ছবি: প্রথম অলো

ঝালকাঠিতে সুগন্ধা নদীর পাড় ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা প্রতিদিন বর্জ্য সংগ্রহ করে মেঘনা পেট্রোলিয়াম ডিপোসংলগ্ন স্থানে নদীর পাড়ে ফেলছেন। ফলে নদীর পাড়ের বড় একটি অংশ ভরাট হয়ে গেছে। নদীর পানি দূষিত হয়ে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে।

ঝালকাঠি জেলা শহরের ভেতর দিয়ে প্রবহমান সুগন্ধা নদী। গত বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিন দেখা যায়, মেঘনা তেলের ডিপোসংলগ্ন স্থানে সুগন্ধা নদীর পাড়ে ভ্যানগাড়িতে করে বর্জ্য এনে ফেলছেন পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। তার পাশেই স্থানীয় বাসিন্দারা গোসল করছেন এবং গৃহস্থালির কাজের জন্য পানি নিয়ে যাচ্ছেন।

মেঘনা পেট্রোলিয়াম ডিপোর শ্রমিক আবদুল বারেক মিয়া বলেন, প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখানে আবর্জনা ফেলেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। বাতাসে ময়লার দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। পাখির দল ময়লা-আবর্জনা তুলে নিয়ে ফেলছে বাসাবাড়িতে। এতে শহরের বিভিন্ন এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।

পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ময়লার ভাগাড় স্থাপনের জন্য সম্প্রতি সদর উপজেলার বাসন্ডা ইউনিয়নের কুনিয়ারি মৌজায় দেড় একর জমি কিনেছে। কিন্তু সেখানে চলাচলের রাস্তা ভালো নয়। এ কারণে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা সব ময়লা ফেলছেন সুগন্ধা নদীতে। জেলা শহর থেকে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ টন বর্জ্য সংগ্রহ করে ওই স্থানে ফেলা হয়।

ঝালকাঠি সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোসাম্মাৎ জেবুন্নেছা বলেন, সুগন্ধা নদীতে যে ময়লা ফেলা হচ্ছে, তার মধ্যে আছে পলিথিন ও প্লাস্টিকবর্জ্য। এগুলো মাছসহ জলজ প্রাণীর জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। দীর্ঘদিন বর্জ্য ফেলায় পলিথিনে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এতে নাব্যতা–সংকট দেখা দিয়েছে সুগন্ধা নদীতে। এতে মাছের প্রজননও ব্যাহত হচ্ছে।

ঝালকাঠি পৌরসভার মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার বলেন, এত দিন আবর্জনা ফেলার জন্য পৌরসভার নির্দিষ্ট কোনো জায়গা ছিল না। কুনিয়ারি মৌজায় দেড় একর জায়গা কেনা হয়েছে। পথ তৈরি হলেই সেখানে ময়লা ফেলা শুরু হবে। তখন আর এখানে–সেখানে পৌরসভার বর্জ্য ফেলতে হবে না।