সুদ দিতে না পারায় কৃষকের গরু নিয়ে গেলেন দাদন ব্যবসায়ীরা

ঋণের সুদ পরিশোধ করতে না পারায় দাদব্যবসায়ীরা সামাদের বাড়ি থেকে জোর করে এই দুটি গরু নিয়ে যায়। ২৪ আগস্টপ্রথম আলো

কৃষক আবদুস সামাদ অন্যের জমিতে দিনমজুরি করেন। এই আয়ে আট সদস্যের সংসার চালাতে বেশ টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যেতে হয় তাঁকে। তাই বাধ্য হয়ে গ্রামের দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে গত বছর ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া সামাদ পাঁচ মাস ধরে ঋণের সুদ পরিশোধ করতে পারছেন না। তাই দাদন ব্যবসায়ীরা তাঁর বাড়ি থেকে জোর করে দুটি গরু নিয়ে যান।


আজ সোমবার বেলা দুইটার দিকে বগুড়ার ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের ভূতবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যায় পুলিশ গরু দুটি উদ্ধার করে।

আবদুস সামাদ বলেন, ধুনট উপজেলা পুকুরিয়া গ্রামের আবদুস সামাদ যমুনা নদীর ভাঙনে পৈতৃক ভিটাবাড়িসহ সর্বস্ব হারিয়ে ১০ বছর আগে পার্শ্ববর্তী ভূতবাড়ি গ্রামে আশ্রয় নেন। অভাবের তাড়নায় বছরখানেক গ্রামের কয়েকজন দাদন ব্যবসায়ীদের গড়ে তোলা বেনামি একটি সমিতি থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন তিনি। সপ্তাহে এক হাজার টাকা সুদ পরিশোধের শর্তে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে এ ঋণ নেন তিনি। নিয়মিত সুদের টাকা পরিশোধ করেছেন। কিন্তু করোনা ও বন্যার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়ায় ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারছিলেন না। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বেনামি ওই সমিতির কোষাধ্যক্ষ ভূতবাড়ি গ্রামের গুজুর আলীর নেতৃত্বে সমিতির সদস্য হারুনর রশিদ ও রফিকুল ইসলাম আজ দুপুরে আবদুস সামাদের বাড়ি থেকে দুটি গরু জোর করে নিয়ে যান।

সমিতির কোষাধ্যক্ষ গুজুর আলী বেলা তিনটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, প্রায় এক বছর আগে গ্রামের লোকজন নিয়ে একটি সমিতি গড়ে তোলা হয়েছে। সমিতির সদস্যসংখ্যা ৬০। গ্রামবাসীর চাহিদা অনুযায়ী ঋণ দেওয়া হয়। আবদুস সামাদকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আবদুস সামাদ ঋণের টাকা পরিশোধ করছেন না। এ কারণে সমিতির সদস্যরা তাঁর বাড়ি থেকে দুটি গরু নিয়ে এসেছেন।


ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে সন্ধ্যায় মাধবডাঙ্গা গ্রামের আবদুল মজিদের বাড়ি থেকে গরু দুটি উদ্ধার করে আবদুস সামাদকে ফেরত দেওয়া হয়েছে। এ সময় দাদন ব্যবসায়ীদের কাউকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।