ইজারাবিহীন মহালে বালু পরিবহনকারী নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা

সুনামগঞ্জে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে মতবিনিমিয়। সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে।প্রথম আলো

সুনামগঞ্জের সাতটি বালুমহালের মধ্যে সব কটিই এখন ইজারাবিহীন। তাই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিপণন বন্ধে এসব মহালে বালু পরিবহনকারী যন্ত্রচালিত কোনো নৌযান চলতে পারবে না বলে ঘোষণা করা হয়েছে। আজ সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে এ–সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

‘অবৈধভাবে বালু উত্তোলন: বিপণন ও নদী-খালের তীরে থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে সচেতনতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক ওই মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আহাদ এই ঘোষণা দেন। সভায় জানানো হয়, সুনামগঞ্জে সাতটি বালুমহাল রয়েছে। এগুলো এবার এখনো ইজারা হয়নি। কিন্তু নানাভাবে এসব মহাল থেকে বালু উত্তোলনের চেষ্টা হচ্ছে। বিভিন্ন সময় প্রশাসন অভিযান চালালেও বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি।

যেহেতু সুনামগঞ্জে এখন কোনো বালুমহাল ইজারা নেই, তাই এসব মহালে বালু পরিবহনের জন্য কোনো যন্ত্রচালিত নৌযান প্রবেশ করতে পারবে না। তবে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল করতে পারবে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আহাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমের কর্মীরা অংশ নেন। সভায় বক্তারা বলেন, সুনামগঞ্জে চলতি ও যাদুকাটা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর দুই তীরে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। মানুষের বাড়িঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা রয়েছে ঝুঁকিতে। ক্ষতি হচ্ছে প্রকৃতি ও পরিবেশের। ইজারা না হওয়ায় এখন রাতের বেলা বালু তোলা হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় অভিযান হয়। অনেক সময় অভিযানের খবর আগেই জেনে যায় বালু উত্তোলনকারীরা। মাঝেমধ্যে ধরা পড়েন শ্রমিকেরা। যারা এসব অবৈধ কাজের পেছনে আছে, তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। এ জন্য প্রশাসন, পুলিশ ও বিজিবির নজরদারি আরও বাড়াতে হবে।

সভায় জেলা প্রশাসক আবদুল আহাদ বলেন, যেহেতু সুনামগঞ্জে এখন কোনো বালুমহাল ইজারা নেই, তাই এসব মহালে বালু পরিবহনের জন্য কোনো যন্ত্রচালিত নৌযান প্রবেশ করতে পারবে না। তবে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল করতে পারবে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ২৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাকসুদুল আলম, সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সাংসদ শামসুন্নাহার বেগম, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলম, সুনামগঞ্জ পরিবেশ আন্দোলনের সভাপতি মো. শফিকুল আলম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসমিন নাহার, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সমীর বিশ্বাস, তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ, সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি পঙ্কজ দে, সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি লতিফুর রহমান, পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক পীযূষ পুরকায়স্থ প্রমুখ।