সুনামগঞ্জে পাওনা টাকা আদায় করতে গাছে বেঁধে নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল

অপরাধ
প্রতীকী ছবি

সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় পাওনা টাকা আদায় করতে একজনকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ব্যক্তিকে নির্যাতনের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

নির্যাতনের শিকার ব্যক্তির নাম তোফায়েল আহমদ (৩২)। তিনি উপজেলার শিমুলবাক ইউনিয়নের মুক্তাখাই গ্রামের ফজর আলীর ছেলে। চাকরি করেন স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি পদে। এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার তোফায়েল আহমদ বাদী হয়ে একই গ্রামের শাহনুর মিয়ার (৩৫) বিরুদ্ধে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

মুক্তাখাই গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, দুই বছর আগে শাহনুর মিয়ার কাছ থেকে তোফায়েলের চাচাতো ভাই শাহজাহান এক লাখ টাকা ধার নিয়েছিলেন। এই টাকার জামিনদার ছিলেন তোফায়েল। কিন্তু শাহজাহান সময়মতো টাকা ফেরত দিতে পারেননি। বিষয়টি নিয়ে গ্রামে একাধিকবার সালিস বৈঠক হয়েছে। কিন্তু শাহনুর তাঁর টাকা ফেরত পাননি। একপর্যায়ে ঋণগ্রহীতা শাহজাহান গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শাহনুর মিয়া গত রোববার দুপুরে তোফায়েল আহমদের স্কুলে গিয়ে তাঁকে অফিসকক্ষ থেকে বের করেন। পরে স্কুলের সামনের একটি গাছের গুঁড়িতে বেঁধে বেধড়ক মারধর করেন তাঁকে। মঙ্গলবার সকালে মারধরের ওই ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

আমার ভাইকে গাছের সঙ্গে বেঁধে অমানবিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। শাহনুরকে গ্রামের মানুষ ভয় পান। তাঁর বিরুদ্ধে কেউ কোনো কথা বলে না। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।
সালেহ আহমদ, তোফায়েল আহমদের বড় ভাই

১৪ মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, শাহনুর মিয়া গাছের ডাল দিয়ে বেধড়ক পেটাচ্ছেন তোফায়েল আহমদকে। তোফায়েল মার খেয়ে ‘মা গো মা গো’ বলে চিৎকার করছেন। আর শাহনুর মিয়া মারধর করার সময় বলছেন, গ্রামে তাঁর ওপর কেউ নেই। এ সময় দু-একজন তোফায়েলকে রক্ষায় এগিয়ে এলে তাঁদের ওপরও ক্ষুব্ধ হন শাহনুর। পরে গ্রামের অন্য লোকদের সহায়তায় তোফায়েলকে উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন তাঁর পরিবারের লোকজন।

তোফায়েল আহমদের বড় ভাই সালেহ আহমদ বলেন, ‘আমার ভাইকে গাছের সঙ্গে বেঁধে অমানবিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। শাহনুরকে গ্রামের মানুষ ভয় পান। তাঁর বিরুদ্ধে কেউ কোনো কথা বলে না। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।’

ঘটনার পর থেকে শাহনুর মুঠোফোন বন্ধ করে গা ঢাকা দিয়েছেন। এ জন্য তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এ বিষয়ে শিমুলবাক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য তাজ উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পাওনা টাকা আদায় করা নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। শাহনুর মিয়া তাঁর পাওনা টাকা না পেয়ে জামিনদার তোফায়েল আহমদকে মারধর করেছেন।

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মুক্তাদির হোসেন বলেন, ‘আমরা এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’