সুনামগঞ্জের ধসে পড়া সেতু পরিদর্শনে সচিব

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম (নীল পাঞ্জাবি পরা) আজ শুক্রবার সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ধসে যাওয়া কোন্দানালা সেতু পরিদর্শন করেন
ছবি: প্রথম আলো

সুনামগঞ্জের পাগলা-জগন্নাথপুর-আউশকান্দি-আঞ্চলিক মহাসড়কের ধসে যাওয়া কোন্দানালা সেতু পরিদর্শন করেছেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম। আজ শুক্রবার দুপুরে তিনি ওই সেতু পরিদর্শন করেন।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের  সচিব নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পাগলা-জগন্নাথপুর-আউশকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কের কোন্দানালা সেতুটির গার্ডার ধসের ঘটনাটি দুঃখজনক। এ ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে বিস্তারিত বলা যাবে। আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সবগুলো সেতুর কাজ শেষ করতে বলেছি। রানীগঞ্জ সেতুসহ সব সেতুর কাজ যথাসময়ে মান নিশ্চিত করে শেষ করতে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এসব কাজের তদারকি আরও বাড়ানো হবে।’

সচিব নজরুল ইসলাম আরও বলেন, গার্ডার বসানোর সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে তদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব না। তিনি এ নিয়ে জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হওয়ায় আহ্বান জানিয়ে বলেন, সেতুগুলোর কাজের মান নিশ্চিতে আরও তদারকি বাড়ানো হবে।

নজরুল ইসলাম প্রথমে কোন্দানালা সেতু পরিদর্শন করেন। পরে তিনি জগন্নাথপুর উপজেলার  রানীগঞ্জে সিলেট বিভাগের দীর্ঘতম রানীগঞ্জ সেতুসহ সড়কের আরও ছয় পিসি গার্ডার সেতুর কাজ দেখেন। এ সময় তিনি  ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, শ্রমিক এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন।

নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই ধসে পড়েছে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কোন্দানালার সেতুর গার্ডার
ছবি: প্রথম আলো

সেতুগুলো পরিদর্শনের সময় নজরুল ইসলামের সঙ্গে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী তুষার কান্তি সাহা, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী উৎফল সামন্ত ,সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম, উপসহকারী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান ছিলেন।

এলাকাবাসী ও সওজ সুনামগঞ্জ কার্যালয় সূত্র জানায়,পাগলা-জগন্নাথপুর-আউশকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কের ডাবর পয়েন্ট থেকে জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ পর্যন্ত ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাতটি পিসি গার্ডার সেতু ও ১২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি বক্স গার্ডার সেতুর কাজ চলছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম এম বিল্ডার্স সেতুগুলোর কাজ বাস্তবায়ন করছে।

গত রোববার রাতে কোন্দানালা সেতুর গার্ডার বসানোর সময় হাইড্রোলিক জ্যাকের (ক্রেন) পাইপ ফেটে একটি গার্ডার আরেকটির ওপর পড়ে যায়। এতে ওই সেতুর পাঁচটি গার্ডার ধসে পড়ে।

গত রোববার রাতে কোন্দানালা সেতুর গার্ডার বসানোর সময় হাইড্রোলিক জ্যাকের (ক্রেন) পাইপ ফেটে একটি গার্ডার আরেকটির ওপর পড়ে যায়। এতে ওই সেতুর পাঁচটি গার্ডার ধসে পড়ে।  এরপর থেকে এলাকাবাসী নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় সেতু ধসে পড়ার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন। সেতু ধসের ঘটনা তদন্তে দুটি  কমিটি গঠন করা হয়েছে। একটি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে ও অপরটি সওজ গঠন করেছে। ওই দুটি কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।


সওজ সূত্র জানায়, ৫০.২ মিটার দীর্ঘ ও ১০.২৫ মিটার প্রস্থের কোন্দানালা সেতুর নির্মাণ ব্যয় ১৩ কোটি টাকা। ইতিমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সাড়ে তিন কোটি টাকা বিল পরিশোধ করা হয়েছে। তবে ধসে যাওয়া গার্ডারের কোনো বিল পরিশোধ করা হয়নি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম এম বিল্ডার্সের প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ জানান, ‘হাইড্রোলিক জ্যাকের পাইপ ফেটে দুর্ঘটনায় গার্ডার ধসের ঘটনা ঘটেছে। আমরা ধসে পড়া গার্ডারগুলো সরিয়ে নতুন করে কাজ শুরু করেছি। আশা করছি নির্ধারিত মেয়াদের আগেই সেতুর কাজ শেষ করা হবে।’

এ বিষয়ে সওজের সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে  বলেন, ‘সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের  সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।