সুনামগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও লেখক বজলুল মজিদ চৌধুরীর দাফন সম্পন্ন

সুনামগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুল মজিদ চৌধুরীর মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌরভবন চত্বরে
ছবি: প্রথম আলো

সুনামগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্ট আইনজীবী, লেখক ও গবেষক বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরুর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার পৌর শহরের ষোলঘর এলাকার কবরস্থানে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়।

বজলুল মজিদ চৌধুরী গতকাল বুধবার বেলা তিনটার দিকে মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন রেখে গেছেন।

আজ বেলা ১১টায় বজলুল মজিদ চৌধুরীর মরদেহ প্রথমে নেওয়া হয় তাঁর দীর্ঘদিনের কর্মস্থল জেলা আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে। সেখানে আইনজীবীদের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। একই সময় শোকসভা হয় আইনজীবীদের উদ্যোগে।

সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য পর্যায়ক্রমে তাঁর মরদেহ পৌর শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও পৌরভবন চত্বরে রাখা হয়। শহরের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। বেলা ২টায় তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে। এখানে তাঁর প্রতি রাষ্ট্রীয় সম্মাননা জানানো হয়। বেলা আড়াইটায় শহরের ষোলঘর এলাকার পুরোনো জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাঁকে দাফন করা হয়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুল মজিদ চৌধুরী সুনামগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ‘রক্তাক্ত ৭১ সুনামগঞ্জ’ নামের একটি বই লেখেন। তিনি ১৯৫২ সালের ২ এপ্রিল সুনামগঞ্জ শহরের ষোলোঘর এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রজীবন থেকেই প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। কলেজে পড়া অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। তিনি ৫ নম্বর সেক্টরের সাব-সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন।

ছাত্রজীবন থেকে সাংবাদিকতার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন বজলুল মজিদ। তিনি দৈনিক ‘পূর্বদেশ’ ও দৈনিক ‘সংবাদ’-এর জেলা সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করেছেন। আমৃত্যু তিনি আইন পেশায় যুক্ত ছিলেন। শহরের বিভিন্ন সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের সঙ্গেও তিনি যুক্ত ছিলেন। স্থানীয়ভাবে মানুষের অধিকার আদায়ে নানা আঞ্চলিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। একজন প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক মানুষ হিসেবে তিনি সব মহলে পরিচিত ছিলেন।