সুন্দরবন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা বহাল, বিপাকে ব্যবসায়ী-কর্মচারীরা

সুন্দরবন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন পর্যটন ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা। মোংলা, বাগেরহাট, ৩১ আগস্টছবি: প্রথম আলো

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিলে মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে সুন্দরবনে সব দর্শনার্থী ও পর্যটকের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বন বিভাগ। এরপর পাঁচ মাস কেটে গেলেও এখনো সেই নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে। ফলে সুন্দরবনসংশ্লিষ্ট দুই সহস্রাধিক পর্যটন ব্যবসায়ী ও কর্মচারী পড়েছেন বিপাকে। তাঁদের রোজগার বন্ধ থাকায় কষ্টে জীবন যাপন করতে হচ্ছে।

এদিকে নিষেধাজ্ঞা বাতিলের দাবিতে সোমবার মোংলায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন সুন্দরবনসংশ্লিষ্ট পর্যটন ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগ সূত্র জানায়, অক্টোবর থেকে মার্চ মাস সুন্দরবনে পর্যটন মৌসুম হলেও সারা বছরই সুন্দরবনে পর্যটক ও দর্শনার্থীরা ভিড় করে থাকেন। বন বিভাগ উল্লেখযোগ্য হারে পর্যটকদের কাছ থেকে রাজস্ব আয় করে থাকে। এ শিল্পের সঙ্গে শুধু মোংলা উপজেলায় ৫০টি লঞ্চ, ৩৫০টি ট্যুরিস্ট বোট ও ১৫০টি ট্রলারের দুই সহস্রাধিক কর্মচারী ও মালিক জড়িত। চলতি বছরের মার্চ মাসে সারা বিশ্বের মতো করোনা মহামারি বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়ে। ফলে মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে সুন্দরবনে সব ধরনের দর্শনার্থী ও পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বন বিভাগ। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েন সংশ্লিষ্ট পর্যটক ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা।

মোংলা বন্দর জালিবোট মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি হোসাইন মোহাম্মদ দুলাল বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে মার্চ মাস থেকে সুন্দরবনে পর্যটক ও নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয় বন বিভাগ। ফলে দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে এই পর্যটনশিল্পের সঙ্গে জড়িত দুই সহস্রাধিক মালিক ও কর্মচারী বেকার হয়ে পড়েছেন। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে তাঁরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তিনি আরও বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন স্থানের পর্যটনকেন্দ্র ইতিমধ্যে খুলে দেওয়া হলেও ব্যতিক্রম সুন্দরবনের ক্ষেত্রে। আমরা ব্যবসায়ী-কর্মচারীরা অচিরেই সুন্দরবন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা তুলে দিতে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি। তা না হলে আমাদের পথে বসতে হবে। পাশাপাশি আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হবে বন বিভাগ।’ স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পর্যটন ব্যবসা পরিচালনা করার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।

পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘মার্চ মাস থেকে বন্ধ থাকার কারণে শুধু পর্যটন ব্যবসায়ী নয়, বন বিভাগও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ৫ মাসে আমরা ১৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকার রাজস্ব হারিয়েছি। তবে সুন্দরবন ভ্রমণ উন্মুক্ত করে দেওয়ার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা আমরা পাইনি। নির্দেশনা পেলেই পর্যটকদের জন্য অবশ্যই সুন্দরবন খুলে দেওয়া হবে।’