সুন্দরবনে পর্যটকের কাছ থেকে ড্রোন জব্দ

ড্রোন
প্রতীকী ছবি: রয়টার্স

সুন্দরবনে ঘুরতে আসা এক পর্যটকের কাছ থেকে একটি ড্রোন জব্দ করেছে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ। শনিবার দুপুরে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের কটকা এলাকায় অবস্থান করা একটি লঞ্চ থেকে এটি জব্দ করা হয়।

বন বিভাগ জানায়, দুদিনের অনুমতি নিয়ে শনিবার সকালে শরণখোলা দিয়ে পর্যটকবাহী ‘এমভি টাঙ্গুয়ার হাওড়’ লঞ্চটি সুন্দরবনে প্রবেশ করে। কিছুদূর যাওয়ার পর লঞ্চে থাকা এক পর্যটক বনের সুপতি এলাকায় ড্রোনটি ওড়ান। এর পরপরই লঞ্চে থাকা বন বিভাগের নিরাপত্তাকর্মী ড্রোনটি নামিয়ে নিজের জিম্মায় নেন। লঞ্চটিতে ৩৫ জন বাংলাদেশি পর্যটক ছিলেন। তাঁরা টাইগার ট্যুরস লিমিটেড নামের একটি ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঢাকা থেকে সুন্দরবন ভ্রমণে আসে।

শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে কটকা এলাকায় ওই লঞ্চটি থেকে ড্রোনটি জব্দ করেছি। এটি বর্তমানে কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেস্টার আবুল কালামের কাছে রয়েছে। এ বিষয়ে ট্যুর অপারেটর ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

যে ব্যক্তির কাছ থেকে ড্রোনটি উদ্ধার করা হয়েছে, তিনি পরিবার নিয়ে সুন্দরবন এসেছিলেন। তাঁর দাবি, না জেনেই তিনি এটি উঠিয়েছেন। তিনি একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা।

এর আগে বন বিভাগ ২০১৬ সালের জানুয়ারি এবং ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে সুন্দরবনের পূর্ব বন বিভাগ এলাকা থেকে দুটি ড্রোন জব্দ করেছিল। ওই দুবারই উদ্ধার হওয়া ড্রোন দুটি ছিল বিদেশি নাগরিকদের।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. বেলায়েত হোসেন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, সুন্দরবন একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চল। এখানে অনুমতি ছাড়া ড্রোন ওঠানো নিষিদ্ধ। কেউ ভিডিও ধারণ বা কোনো প্রয়োজনে ড্রোন ব্যবহার করতে চাইলে মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নিতে হয়। এই পর্যটকেরা অনুমতি না নিয়ে ড্রোন ওড়ানোয় বন বিভাগ তা জব্দ করেছে। যে ব্যক্তি ড্রোনটি নিয়ে আসেন, তিনি ব্যাংকে চাকরি করেন। তিনি দাবি করেছেন, শখের বশে তিনি এটি নিয়ে এসেছেন।

এর আগে বন বিভাগ ২০১৬ সালের জানুয়ারি এবং ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে সুন্দরবনের পূর্ব বন বিভাগ এলাকা থেকে দুটি ড্রোন জব্দ করেছিল। ওই দুবারই উদ্ধার হওয়া ড্রোন দুটি ছিল বিদেশি নাগরিকদের। তবে এবার উদ্ধার হওয়া ড্রোনটি এক বাংলাদেশি পর্যটকের।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সুন্দরবন একটি সংবেদনশীল জায়গা। এ ধরনের নিয়মবহির্ভূত ঘটনা যাতে না ঘটে, তার দায়িত্বও কিন্তু ট্যুর অপারেটরদের। পর্যটক হিসেবে এখন আমাদের কোথায় কী ব্যবহার হওয়া উচিত, করা যাবে, যাবে না সে সম্পর্কে অধিকাংশের ধারণ কম। সে ক্ষেত্রে ট্যুর অপরাটেরদের দায়িত্ব হলো তাঁকে সবকিছু জানানো এবং নিশ্চিত করা। তা করা হচ্ছে না বলেই এমন ঘটনা বারবার ঘটছে।  

এ বিষয়ে টাইগার ট্যুরস লিমিটেডের কনসালট্যান্ট ওয়াকিল আহমেদ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বন বিভাগ থেকে ড্রোনের বিষয়ে আমাদের কোনো নির্দেশনা দেওয়া ছিল না। এ জন্য আমরা আমাদের অতিথিদের এ বিষয়ে কিছু বলিনি। আর তাঁরাও যে ড্রোন নিচ্ছেন, সে বিষয়ে আমাদের কিছুই জানাননি। এখন বিষয়টি বন বিভাগ দেখছে।’