সুব্যবস্থা দেখে দলে দলে রোহিঙ্গারা ভাসানচরে আসতে আগ্রহী: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নোয়াখালীতে নবগঠিত ভাসানচর থানার উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। ছবিটি আজ মঙ্গলবার দুপুরে নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচর থেকে তোলা
প্রথম আলো

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ভাসানচরে আসা রোহিঙ্গাদের ভুল ভেঙেছে। তারা এখানে আসার  আগে ভেবেছিল, এখানে এলে ঠিকমতো তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা হবে না, কষ্টে থাকবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাসানচরে তাদের জন্য থাকা-খাওয়ার যে সুব্যবস্থা করে রেখেছেন, তা দেখে তাদের ধারণা বদলে গেছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে নোয়াখালীর হাতিয়ার নবগঠিত ভাসানচর থানার উদ্বোধনকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে ভাসানচরে আসা রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে এখানকার সুব্যবস্থার কথা জানতে পেরে দলে দলে রোহিঙ্গারা ভাসানচরে আসার আগ্রহ প্রকাশ করছে। পর্যায়ক্রমে এখানে আরও অনেক রোহিঙ্গা স্থানান্তর করা হবে।

জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নোয়াখালী-৬ আসনের সাংসদ আয়েশা ফেরদাউস, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোস্তফা কামাল উদ্দীন, পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজির আহমেদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহিদুজ্জামান, চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. আনোয়ার হোসেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান, ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পের পরিচালক কমোডর আবদুল্লাহ আলম মামুন চৌধুরী, সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।  

অনুষ্ঠানে নোয়াখালীর এসপি মো. আলমগীর হোসেন ভাসানচর আশ্রায়ণ প্রকল্প-৩–এ অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলাসহ সামগ্রিক বিষয়ে প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্য অতিথিদের অবহিত করেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রধান অতিথির উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে নোয়াখালীর দশম থানা হিসেবে ভাসানচর থানার যাত্রা শুরু হলো। ভাসনচর বঙ্গোপসাগর ও মেঘনা মোহনায় জেগে ওঠা একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। এর দৈর্ঘ্য ৯ কিলোমিটার, প্রস্থ ৬ কিলোমিটার। আয়তন ৬৫ বর্গকিলোমিটার। হাতিয়া উপজেলা থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার পূর্বে এবং চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলা থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পূর্বে এই দ্বীপের অবস্থান। হাতিয়ার চরইশ্বর ইউনিয়নের ছয়টি মৌজা নিয়ে এই থানা গঠিত।

ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প-৩–এ বসবাসকারী মিয়ানমার থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাসহ অন্যদের নিরাপত্তায় ও আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিতের জন্য একজন পুলিশ পরিদর্শক (অফিসার ইনচার্জ), দুজন উপপরিদর্শক (এসআই), চারজন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই), ১৭ জন কনস্টেবলসহ মোট ২৪টি পদ নিয়ে ভাসানচর থানার যাত্রা শুরু হলো।

থানার কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগেই গত ২৭ এপ্রিল রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তাসহ সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ভাসানচর অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পে জেলা পুলিশের একজন পরিদর্শকসহ নারী ও পুরুষ সদস্য মিলে ৪৩ জন সদস্য, এপিবিএনের ২৩৫ সদস্য, এসবি ঢাকার ১০ জন সদস্য নিয়োজিত হন। বর্তমানে ভাসানচরে ৩ হাজার ৭৬২ জন রোহিঙ্গা বসবাস করছে। থানা গঠিত হওয়ায় তাদের নিরাপত্তাসহ সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত হবে।