সুস্থতার কথা জানাতে গিয়ে জানলেন কোভিড রোগী মৃত

  • ওই ব্যক্তি জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ৫ আগস্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান

  • ৭ আগস্ট জানা যায় তিনি করোনা পজিটিভ

  • ৮ আগস্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান

  • ১৮ আগস্ট সুস্থ হওয়ার তথ্য জানাতে ফোন দেওয়া হয়

ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে এক কোভিড–১৯ রোগীকে সুস্থ হওয়ার তথ্য জানাতে ফোন দেওয়া হয়। কিন্তু সেখান থেকে জানানো হয়, ১০ দিন আগেই ওই রোগী মারা গেছেন। ৫৪ বছর বয়সী ওই রোগীর বাড়ি ছাগলনাইয়া উপজেলার একটি গ্রামে।

স্বাস্থ্য বিভাগকে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওই রোগী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৮ আগস্ট মারা গেছেন।


পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ওই রোগীর অবস্থার খোঁজ–খবর নিয়ে তাঁকে সুস্থ ঘোষণা করতে ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু ওই ব্যক্তি কোভিড-১৯ শনাক্ত হওয়ার পরের দিন মারা যান।

স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে কোনো ধরনের খোঁজ–খবর নেওয়া হয়নি। ফেনী জেনারেল হাসপাতালে থাকার সময়ও যথাযথ চিকিৎসা পাননি বাবা।
মৃত ব্যক্তির মেয়ের অভিযোগ

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, ওই ব্যক্তি জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ৫ আগস্ট ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের কাছে যান। ওই দিনই করোনা পরীক্ষার জন্য তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য বিভাগ। পরিবারের সদস্যরা তাঁকে ওই দিন ফেনী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। ৭ আগস্ট তাঁর নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে জানা যায় তিনি করোনা পজিটিভ। অবস্থার অবনতি হলে ওই রাতেই ফেনী থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরের দিন ৮ আগস্ট সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। বিকেলে তাঁকে ছাগলনাইয়ায় গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

অনেক রোগীর ক্ষেত্রে মুঠোফোন বন্ধ থাকায় খোঁজ–খবর নেওয়া সম্ভব হয় না। এই ব্যক্তির ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।
শিহাব উদ্দিন, ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা

মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তিনি দীর্ঘদিন আবুধাবীতে ছিলেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে ১০ মার্চ ছুটিতে দেশে আসেন। ৩ এপ্রিল তাঁর ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে তিনি ফিরে যেতে পারেননি।

ওই ব্যক্তির মেয়ে অভিযোগ করেন, করোনা পজিটিভ হওয়ার পর স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে কোনো ধরনের খোঁজ–খবর নেওয়া হয়নি। ফেনী জেনারেল হাসপাতালে থাকার সময়ও যথাযথ চিকিৎসা পাননি তাঁর বাবা। ফলে তাঁর শরীরের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়।

ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা শিমুল বড়ুয়া বলেন, সাধারণত কোভিড শনাক্ত হওয়ার ৮-১০ দিন পর রোগীর খোঁজখবর জানতে ফোন দেওয়া হয়। সে হিসেবে ওই ব্যক্তিকে ফোন করা হয়েছিল।

ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শিহাব উদ্দিনের দাবি, অনেক রোগীর ক্ষেত্রে মুঠোফোন বন্ধ থাকায় খোঁজ–খবর নেওয়া সম্ভব হয় না। এই ব্যক্তির ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।