সেই ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ভাইকে এবার ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা জরিমানা

জনবল ও যানবাহন ব্যবহার করায় সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে সিটি করপোরেশনকে। টিলা কাটায় নেতৃত্ব দেওয়া নূর উদ্দিন দাবি করেছিলেন, ‘সিটি মেয়রের নির্দেশেই’ তিনি টিলা কাটছিলেন।

সিলেট সিটি করপোরেশনের ওয়াকওয়ে প্রকল্প এলাকার পাশে গোয়াবাড়ি টিলাটি এভাবেই কেটে ফেলা হয়। গত বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায়।প্রথম আলো

সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) খননযন্ত্র ও দুটি ট্রাক ব্যবহার করে টিলা কাটার ঘটনায় স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ভাই নূর উদ্দিনকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। জনবল ও যানবাহন ব্যবহার করায় সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে সিটি করপোরেশনকে।


আজ বুধবার পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের এনফোর্সমেন্ট দপ্তরে শুনানি শেষে এক আদেশে জরিমানা করা হয়। শুনানিতে জরিমানাপ্রাপ্ত নূর উদ্দিনসহ সিটি করপোরেশনের খননযন্ত্র ও ট্রাকের তিন চালক উপস্থিত ছিলেন।

যোগাযোগ করলে পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের পরিচালক মোহাম্মদ এমরান হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সিটি করপোরেশনের যানবাহন নিয়ে টিলা কাটার ঘটনা তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় ওই টিলা কাটায় জড়িত ব্যক্তি হিসেবে সিটি করপোরেশনের তিনজন ও মেয়রের নির্দেশ আছে বলে দাবি করে টিলা কাটায় নেতৃত্ব দেওয়া নূর উদ্দিনকেও তলব করা হয়েছিল। চারজনের উপস্থিতিতে শুনানি শেষে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে নূর উদ্দিনকে। বাকি তিনজন ভবিষ্যতে এ রকম কাজ করবেন না বলে মুচলেকা দেওয়ায় তাঁদের সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়।

পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক আরও জানান, টিলা কাটার ঘটনায় মেয়রের নির্দেশ আছে বলা হলেও এ ব্যাপারে তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে সিটি করপোরেশনকে এ ব্যাপারে সতর্ক করে দেওয়া হয়। ভবিষ্যতে টিলা কাটা বা পরিবেশ ধ্বংসের কোনো কার্যক্রমে প্রতিষ্ঠানের জনবলের সংশ্লিষ্টতা পেলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সিসিকের বাহন ব্যবহার করা হলেও টিলা কাটায় প্রতিষ্ঠান কোনোভাবে জড়িত ছিল না। পরিবেশ অধিদপ্তরের সতর্ক করে দেওয়ার আগে তিনজনকে লিখিতভাবে কারণ দর্শাতেও বলা হয়েছিল।
রুহুল আমিন, নির্বাহী প্রকৌশলী (যানবাহন), সিলেট সিটি করপোরেশন

সিটি করপোরেশনের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কালীবাড়ি ছড়ায় ওয়াকওয়ে (হাঁটাপথ) প্রকল্প এলাকার পাশে একটি রাস্তায় মাটি কাটার কথা বলে গোয়াবাড়ির টিলা কাটা হচ্ছিল। খবর পেয়ে গত বুধবার (১৯ আগস্ট) পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি পরিদর্শক দল ওই জায়গা পরিদর্শন করে। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইলিয়াছুর রহমানের ভাই নূর উদ্দিন দাবি করেন, ‘সিটি মেয়রের নির্দেশেই’ তিনি টিলা কাটছিলেন।


তবে যোগাযোগ করা হলে সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেছিলেন, টিলা কাটার স্থানটি সিটির বাইরে। তিনি কোনোভাবেই এ নির্দেশ দেননি। টিলা কাটায় সিটি করপোরেশনের খননযন্ত্রসহ দুটি ট্রাক ব্যবহার করায় মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন প্রথম আলোকে।

এ নিয়ে গত শনিবার প্রথম আলোর ৩-এর পাতায় ‘মেয়রের নির্দেশেই কাটা হচ্ছে সিটির বাইরের টিলা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়।


সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, খননযন্ত্র ও দুটি ট্রাক ব্যবহার করায় তাৎক্ষণিকভাবে যানবাহন দপ্তরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নির্বাহী প্রকৌশলী (যানবাহন) রুহুল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, সিসিকের বাহন ব্যবহার করা হলেও টিলা কাটায় প্রতিষ্ঠান কোনোভাবে জড়িত ছিল না। পরিবেশ অধিদপ্তরের সতর্ক করে দেওয়ার আগে তিনজনকে লিখিতভাবে কারণ দর্শাতেও বলা হয়েছিল।