সেতুতে ফাটল, পলেস্তারা খসে পড়ছে, দুর্ঘটনার শঙ্কা

স্বাধীনতার আগে সেতুটি নির্মিত হয়েছিল। এরপর আর মেরামত করা হয়নি। সম্প্রতি সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। দুর্ঘটনা আশঙ্কা বাড়ছে।

জরাজীর্ণ সেতুর পলেস্তারা খসে রড বের হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি ঝিনাইদহের ডেফলবাড়ি এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

সেতুর ওপরে ফাটল। এর নিচে পলেস্তারা খসে পড়েছে। সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। রডগুলো মরিচা ধরে খসে পড়ছে। স্থানীয় ব্যক্তিদের আশঙ্কা, যেকোনো সময় সেতুধসে প্রাণহানির মতো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ঝিনাইদহ-কোটচাঁদপুর ভায়া জিয়ানগর সড়কের ডেফলবাড়ি এলাকায় বেগবতী নদীর ওপর এই সেতুর অবস্থান।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, অনেক আগে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুর বিষয়ে তথ্য তাদের কাছে নেই। স্থানীয় ব্যক্তিরা বলছেন, স্বাধীনতার আগে সেতুটি নির্মিত হয়েছিল। এরপর আর মেরামত করা হয়নি। সম্প্রতি সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যেকোনো সময় এটি ধসে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ৫০ ফুট লম্বা সেতুটির ওপর দিয়ে প্রতিদিন প্রচুর যানবাহন চলাচল করে। পার্শ্ববর্তী ৬টি ইউনিয়নের ৭০ গ্রামের মানুষ এই সড়ক দিয়ে ঝিনাইদহ ও কোটচাঁদপুর হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে।

জেলা শহর থেকে একটি সড়ক কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর, মহেশপুর উপজেলা হয়ে পার্শ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলায় মিশেছে। এটি আঞ্চলিক সড়ক। এই সড়কের পশ্চিমে রয়েছে সদর উপজেলার পাগলাকানাই, গান্না, মধুহাটি, মহারাজপুর, কুমড়াবাড়িয়া ও কোটচাঁদপুর উপজেলার কুশনা ইউনিয়ন। ছয়টি ইউনিয়ন সংযোগ রেখে চলে গেছে ঝিনাইদহ শহরের পাগলাকানাই থেকে কোটচাঁদপুর শহর পর্যন্ত আরেকটি সড়ক। যার দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। এই সড়কের জিয়ানগর থেকে পশ্চিমে আরেকটি সড়ক গিয়ে সদর উপজেলার ডাকবাংলা বাজারে মিশেছে। পূর্বে চলে গেছে কালীগঞ্জ শহর। এটি কালীগঞ্জ-ডাকবাংলা ভায়া জিয়ানগর সড়ক হিসেবে পরিচিত। এটির দূরত্ব ২১ কিলোমিটার। এসব সড়কের পার্শ্ববর্তী এলাকায় অন্তত ৭০টি গ্রাম রয়েছে।

সদর উপজেলার রামনগর গ্রামের জহির রায়হান বলেন, ডেফলবাড়ি এলাকায় বেগবতী নদীর ওপর সেতু রয়েছে। সেতুটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সেতুটির ওপরে বেশ কয়েকটি ফাটল দেখা দিয়েছে। আর নিচে পলেস্তারা খুলে পড়ছে। সেতুতে ব্যবহার করা রডগুলো মরিচা পড়ে খসে খসে পড়ছে। এই অবস্থায় সেতুটির ওপর দিয়ে বড় বড় ট্রাক মালামাল বোঝায় করে চলাচল করছে। ফলে যেকোনো সময় ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

৫৮ বছর বয়সী গোলাম মোস্তফার ভাষ্য, শিশু বয়স থেকেই তিনি বেগবতী নদীর সেতুটি দেখছেন। তিনি বলেন, এখন সেতুটির যে অবস্থা, তাতে দ্রুত মেরামত না করলে দুর্ঘটনার কবলে পড়বে যানবাহন। প্রাণহানির আশঙ্কাও রয়েছে।

ডেফলবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা আক্কাচ আলী বলেন, সেতুটির বিষয়টি তাঁরা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে জানিয়েছেন। কিন্তু এটি নতুন করে নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন বলেন, সেতুটির বিষয়ে দ্রুত খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।