সেফ হোম থেকে পালালেন তিন তরুণী ও এক কিশোরী

ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা এলাকার সেফ হোম। এখান থেকেই আজ শুক্রবার ভোরে গ্রিল ভেঙে সীমানাপ্রাচীর টপকে পালিয়েছেন তিন তরুণী ও এক কিশোরী
প্রথম আলো

ফরিদপুরে সেফ হোম থেকে পালিয়ে গেছেন তিন তরুণী ও এক কিশোরী। আজ শুক্রবার ভোর চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। আজ বিকেল ৫টা পর্যন্ত ১৩ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও পালিয়ে যাওয়া ওই নিবাসীদের কোনো সন্ধান মেলেনি।

এ সেফ হোমটির নাম ‘মহিলা ও শিশু কিশোরী হেফাজতিদের নিরাপদ আবাসন কেন্দ্র’। সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত এ সেফ হোমটি ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা মহল্লার এলাকায় সোহরাওয়ার্দী লেকপাড়ের পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত।

ওই সেফ হোম সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেখানে মোট ৭২ জন নিবাসী ছিলেন। এর মধ্য থেকে চারজন শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনকারী দুই আনসার সদস্য সালমা বেগম (২৬) ও বিউটি আক্তারের (২৭) ঘুমিয়ে থাকার সুযোগে গ্রিল ভেঙে সীমানাপ্রাচীর টপকে পালিয়ে যান।

পালিয়ে যাওয়া ওই তিন তরুণীর একজন রাজবাড়ী আদালত থেকে আসা, বয়স ২১ বছর। আরেকজন রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ থেকে আসা, বয়স ২০ বছর এবং অপরজন গোপালগঞ্জ থেকে আসা, বয়স ১৮ বছর। শেষজন শরীয়তপুর থেকে আসা কিশোরীর বয়স ১৭ বছর।

পালিয়ে যাওয়া ওই তিন তরুণীর একজন রাজবাড়ী আদালত থেকে আসা, বয়স ২১ বছর। আরেকজন রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ থেকে আসা, বয়স ২০ বছর এবং অপরজন গোপালগঞ্জ থেকে আসা, বয়স ১৮ বছর। শেষজন শরীয়তপুর থেকে আসা কিশোরীর বয়স ১৭ বছর। তাঁরা সবাই কিশোরী বয়সে ভবঘুরে হিসেবে উল্লিখিত জেলা ও উপজেলায় পুলিশের হাতে আটক হয়ে আদালতের মাধ্যমে এ সেফ হোমে আসেন। তাঁদের মধ্যে গোয়ালন্দ থেকে আসা তরুণী এখানে ২০১৫ সাল থেকে ছিলেন। বাকিরাও তিন কিংবা চার বছর ধরে ছিলেন। তাঁদের আইনগত অভিভাবক না পাওয়ায় আদালত তাঁদের সেফ হোমে প্রেরণ করেন।

নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত দুই আনসার সদস্য ঘুমিয়ে থাকার কারণে পালিয়ে যাওয়ার এ ঘটনা ঘটেছে। পালিয়ে যাওয়া ওই নিবাসীদের সন্ধানে পুলিশের পাশাপাশি সেফ হোম কর্তৃপক্ষও কাজ করছে।
রুমানা আক্তার, সেফ হোমের উপতত্ত্বাবধায়ক

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ওই সেফ হোমের উপতত্ত্বাবধায়ক রুমানা আক্তার বলেন, নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত দুই আনসার সদস্য ঘুমিয়ে থাকার কারণে পালিয়ে যাওয়ার এ ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া ওই নিবাসীদের সন্ধানে পুলিশের পাশাপাশি সেফ হোম কর্তৃপক্ষও কাজ করছে।

ফরিদপুর সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আলী আহসান বলেন,  সেফ হোমে জেলখানার মতো ১৮ ফুট উঁচু সীমানাপ্রাচীর ও মোটা গ্রিল ছিল না। গ্রিল ছিল সরু এবং সীমানাপ্রাচীর ছিল ছয় ফুট উঁচু। তিনি বলেন, পালিয়ে যাওয়া নিবাসীদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। ফরিদপুর সেফ হোম থেকে কোনো নিবাসীর পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা এই প্রথম ঘটল।

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ওই সময় যে দুই আনসার সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া তরুণী ও কিশোরীদের উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে।