স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ, সালিস বৈঠকে ধামাচাপার চেষ্টা

ধর্ষণ
প্রতীকী ছবি

সিলেটের জকিগঞ্জে দশম শ্রেণিপড়ুয়া এক ছাত্রীকে (১৪) বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। পরে সালিস বৈঠক করে এ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়। তবে অসুস্থ অবস্থায় ভুক্তভোগী মেয়েটিকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তির পর তা প্রকাশ্যে আসে।

স্থানীয় ও স্কুলছাত্রীর পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার রাতে শৌচাগারে যাওয়ার জন্য স্কুলছাত্রী ঘরের বাইরে বের হয়। এ সময় প্রতিবেশী সালমান আহমদ (২০) ও তাঁর সহযোগীরা তাকে তুলে নিয়ে যায়। এদিকে পরিবারের লোকজন স্কুলছাত্রীকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিলেও তার সন্ধান পায়নি। পরদিন সকালে অচেতন অবস্থায় সালমানের বাড়ির লোকজন ওই ছাত্রীকে বাড়ি ফিরিয়ে দিয়ে যায়। এ ঘটনার পরপরই বিষয়টি গোপন রাখতে চাপ সৃষ্টি শুরু করেন ইউপি সদস্যসহ কয়েকজন প্রভাবশালী। তাঁরা নির্যাতিতার পরিবারকে আইনের আশ্রয় নিতে বাধা দিয়ে ঘটনা ধামাচাপার চেষ্টা চালান। ঘটনার মীমাংসা করতে গত মঙ্গলবার ও গতকাল বুধবার একাধিকবার স্থানীয় ইউপি সদস্য সামছুল হকের বাড়িতে সালিস বৈঠক হয়।

এদিকে স্কুলছাত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার রাতে তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়। এতে ওই প্রভাবশালীরা খেপে গিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজনকে উল্টো নির্যাতনকারীর ঘরবাড়িতে হামলার অভিযোগ এনে সালিস ডাকেন।

ওই ছাত্রীর পরিবারের এক স্বজন বলেন, ‘আমরা অসহায় গরিব বলে সালিসের নামে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মেয়েটিকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। আমরা বিষয়টি থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

ইউপি সদস্য সামছুল হক ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টায় ছিলেন না দাবি করে বলেন, ঘটনার মীমাংসা করতে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। তবে বৈঠকে মেয়ের পরিবারের লোকজন এবং অভিযুক্ত পরিবারের লোকজনের মধ্যে কথা–কাটাকাটির ঘটনা ঘটে।

জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাসেম বলেন, মেয়ের পরিবার অভিযোগ নিয়ে থানায় আসবে বলে জানিয়েছে। ঘটনাটি ধামাচাপার চেষ্টা ও নির্যাতিতার পরিবারকে উল্টো হয়রানির বিষয়টি তিনিও শুনেছেন। অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।