স্কুলে যাওয়ার পথে হঠাৎ ঝড়, নৌকা ডুবে মরল ভাই–বোন

তামান্না আক্তার ও সৌরভ আহমদ
ছবি: সংগৃহীত

চারদিকে বন্যার থই থই পানি। বাড়ি থেকে স্কুলে যেতে এখন নৌকা লাগে। তাই তামান্না আক্তার এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র আনতে ছোট ভাই সৌরভ আহমদকে সঙ্গে নিয়ে নৌকায় করে স্কুলে যাচ্ছিল। কিন্তু পথে ঝড়ের কবলে পড়ে নৌকাটি ডুবে যায়। এতে সলিলসমাধি হয় ভাই ও বোনের।

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের রাজনপুর গ্রামে বুধবার সকালে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। তামান্না আক্তার এলাকার সমুজ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। আর সৌরভ আহমদ পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। রাজনপুর গ্রামেই তাদের বাড়ি। বাবা কৃষক ময়না মিয়া।

সমুজ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ অসীম মোদক বলেন, উপজেলার সর্বত্রই এখন বন্যার থই থই পানি। সকাল থেকেই ভারী বৃষ্টি ছিল। তামান্নাদের বাড়ির সামনে এখন পানি হওয়ায় ওই স্থানটুকু নৌকায় পারাপার হতে হয়। সকালে এক চাচাকে সঙ্গে নিয়ে তামান্না ও তার ভাই একটি ছোট নৌকায় করে কলেজে আসছিল। নৌকার ছাড়ার পরই ঝড় শুরু হয়ে যায়। এ সময় ঝড়ের কবলে পড়ে নৌকাটি ডুবে গেলে তামান্না আক্তার ও সৌরভ আহমদ নিখোঁজ হয়। পরে গ্রামবাসী অনেক খোঁজাখুঁজির করে পানি থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে।

পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ভাই ও বোনের মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা কলেজ প্রাঙ্গণেই করেছেন তাঁরা। এতে তামান্নার বাবা ময়না মিয়াও মত দিয়েছেন। নৌকাতে আরেক ছাত্রী থাকলেও সে সাঁতরে তীরে উঠে যায়।

শিক্ষক অসীম মোদক বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। কলেজের শিক্ষার্থী-শিক্ষক সবাই কাঁদছেন। তামান্না ও সৌরভ মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। তামান্নার আক্তারের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ১৯ জুন। কিন্তু তার আর পরীক্ষা দেওয়া হলো না।

খবর পেয়ে সকালেই ওই গ্রামে যান দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা প্রিয়াংকা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বাড়ির পাশেই এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে। এলাকার সবাই শোকাহত। দাফনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক ৪০ হাজার টাকা পরিবারকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।