স্ত্রী ও মেয়েকে হত্যার দায়ে বেলালের মৃত্যুদণ্ড

ভোলায় স্ত্রী ও শিশুকন্যাকে হত্যার দায়ে বেলাল হোসেন পাটওয়ারী (৪১) নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার ভোলা জেলা ও দায়রা জজ এ বি এম মাহমুদুল হক এ রায় দেন।

বেলাল তাঁর স্ত্রী শাহানাজ বেগমকে (২৬) গলা কেটে এবং এক বছরের মেয়ে মোহনাকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, আসামি মো. বেলাল হোসেন পাটওয়ারী ঢাকায় গাড়ি চালাতেন। মাঝেমধ্যে তিনি গ্রামের বাড়ি ভোলার দৌলতখান উপজেলার পশ্চিম জয়নগর ২ নম্বর ওয়ার্ডে যাওয়া-আসা করতেন। ঢাকায় তিনি পরিবারকে না জানিয়ে আরেকটি বিয়ে করেন এবং তালাক দেন। পরে পরিবারের সম্মতিতে নিজ উপজেলায় শাহানাজ বেগমকে বিয়ে করেন। সেই ঘরে তাঁর দুই সন্তান। নাম মেহেদী (৭) ও মোহনা (১)। দ্বিতীয় বিয়ের কয়েক বছর পর তালাক দেওয়া প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ নিয়ে শাহনাজ ও বেলালের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি, দাম্পত্য কলহ সৃষ্টি হয়।

এর জেরে বেলাল ২০১৭ সালের ২ জুন রাত দুইটার দিকে শাহানাজকে ঘুমের মধ্যে মুখ চেপে ধরে গলা কেটে হত্যা করেন। পরে নিজেকে সন্দেহের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য ঘটনা অন্য খাতে ঘোরানোর চেষ্টা করেন। বেলাল নিহত স্ত্রীকে কম্বল পেঁচিয়ে তাঁর ওপরে কেরোসিন ঢেলে ঘরে আগুন লাগিয়ে দেন। বোঝানোর চেষ্টা করে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে ঘরে আগুন লেগেছে। পরে তিনি ছেলে মেহেদীকে নিয়ে ঘর থেকে দৌড়ে বের হন। বাড়ির পুকুর পাড়ে গিয়ে বেহুঁশ হওয়ার নাটক করেন। ওই সময় স্থানীয় ব্যক্তিরা আগুন নেভানোর আগেই এক বছরের মেয়ে মোহনা ঘরে পুড়ে মারা যায়।

মামলা থেকে আরও জানা যায়, বেলাল ১৬৪ ধারার আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে হত্যার দায় স্বীকার করেন। বেলাল আরও বলেন, স্ত্রী শাহানাজ বেগমের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল। কোনোভাবেই সম্পর্কের উন্নতি করতে পারছিলেন না। এ কারণেই স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

এ মামলায় সরকারপক্ষের আইনজীবী ছিলেন আশ্রাফ হোসেন এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন স্বপন কৃষ্ণ দে।