স্পিডবোটের চালক আটক, ৮ জনের পরিচয় মিলেছে

মাদারীপুরের শিবচরে নৌ দুর্ঘটনায় আজ সোমবার ২৬ জনের প্রাণহানি হয়েছে।
প্রথম আলো

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাংলাবাজার ফেরিঘাটে আজ সোমবার সকালে বালুবাহী বাল্কহেডের সঙ্গে স্পিডবোটের সংঘর্ষের ঘটনায় ২৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্ঘটনায় আহত ৫ জনকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ভর্তি ৫ জনের মধ্যে একজন ওই স্পিডবোটের চালক শাহ আলম। তাঁকে আটক করেছে পুলিশ।

এদিকে নিহত ২৬ জনের মধ্যে আজ বেলা আড়াইটা পর্যন্ত ৮ জনের পরিচয় শনাক্ত করেছে পুলিশ। তাঁরা হলেন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার মাইগ্রো এলাকার আরজু সরদার (৪০) ও তাঁর দেড় বছর বয়সী ছেলে ইয়ামিন, মাদারীপুরের রাজৈর শঙ্কারদি এলাকার তাহের মীর (৩০), কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার মাইখারকান্দি এলাকার কাওসার হোসেন (৪০) ও রুহুল আমিন (৩৫), তিতাস উপজেলার ইসুবপুর এলাকার জিয়াউর রহমান (২৮), মুন্সিগঞ্জের সাতপাড় এলাকার সাগর শেখ (৩৭), পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার পসারিয়াবুনিয়া এলাকার জনি অধিকারী (২৬)। তাঁদের লাশ স্বজনদের কাজে হস্তান্তর করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

ঘাট কর্তৃপক্ষ, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ সূত্র জানায়, আজ সকাল সাতটার দিকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট থেকে ৩১ জন যাত্রী নিয়ে স্পিডবোট মাদারীপুরের শিবচরের বাংলাবাজারের দিকে যাচ্ছিল। বাংলাবাজার ফেরিঘাটের কাছাকাছি এলে নোঙর করা বালুবোঝাই বাল্কহেডের সঙ্গে সেটির সংঘর্ষ হয়। এতে স্পিডবোটটি সজোরে ধাক্কা খেয়ে উল্টে যায়। খবর পেয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করে ফায়ার সার্ভিস ও নৌ পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে ২৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সাঁতরে তীরে উঠছেন ৫ জন। তাঁদের উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে সেখানে এক নারীর মৃত্যু হয়।

ঘটনায় মাদারীপুর স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের উপপরিচালক আজাহারুল ইসলামকে প্রধান করে ছয় সদস্যদের তদন্ত কমিটি করেছে জেলা প্রশাসক রহিমা খাতুন। এ ছাড়া নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসক রহিমা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। লকডাউনে স্পিডবোট বন্ধ থাকার পরেও কেন এমন দুর্ঘটনা—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্পিডবোটটি মুন্সিগঞ্জ থেকে ছেড়ে বাংলাবাজার আসে। তারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে স্পিডবোট ছাড়ে। এসব বিষয় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিরাজ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, স্পিডবোটের চালক গুরুতর আহত। তাঁকে পুলিশের নজরদারিতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসক তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, স্পিডবোটের চালক মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। তাঁর পুরো মাথায় ব্যান্ডেজ। তিনি কিছুই বলতে পারছেন না। মুমূর্ষু অবস্থায় আছেন।

আরও পড়ুন