স্বাদে–ঘ্রাণে অনন্য নতুন জাতের আম বাঘাশাহী

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বলিহার গ্রামে এক নতুন জাতের আমগাছের সন্ধান পাওয়া গেছে। বাঘা উপজেলায় পাওয়া যাওয়ায় এর নাম দেওয়া হয়েছে বাঘাশাহী।

রাজশাহীর বাঘায় নতুন জাতের আম পাওয়া গেছে। কৃষি বিভাগ এর নাম দিয়েছে ‌বাঘাশাহী
ছবি: প্রথম আলো

মে মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে পাকে। আঁশ নেই, আঁটি ছোট। মিষ্টতার পরিমাণ ক্ষীরশাপাতি বা হিমসাগরের কাছাকাছি। নিজস্ব ঘ্রাণ আছে। পাকার পরে টিকে থাকার সময় কমপক্ষে আট দিন। প্রতিবছর আম ধরে। সম্প্রতি এমন ব্যতিক্রমধর্মী জাতের দুটি আমগাছের সন্ধান পেয়েছে কৃষি বিভাগ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নতুন জাতের এই আমের গাছগুলো রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বলিহার গ্রামের। উৎপত্তিস্থলের সঙ্গে মিল রেখে কৃষি কর্মকর্তারা আমের নামকরণ করতে চাইছেন ‘বাঘাশাহী’। ইতিমধ্যে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

বাঘা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বাঘা পৌরসভার মেয়র আবদুর রাজ্জাকের বাগানে এই জাতের দুটি আমগাছ রয়েছে। বয়স ৩০–৪০ বছর। গুটি আম হিসেবে মেয়রের পরিবার গাছটি থেকে আম খেয়ে আসছেন। প্রতিবছর আম ধরে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান জানান, বাঘাশাহী হবে আগাম জাতের একটি নতুন আম। এই আমটি ক্ষীরশাপাতি আমের মতো সুমিষ্ট এবং এর নিজস্ব ঘ্রাণ আছে। তিনি এই সুমিষ্ট আম খেয়ে এর সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছেন। যেহেতু এই আমটি বৈশাখ মাসের শেষ সপ্তাহে পাওয়া যায় এবং এ সময় বাজারে এ রকম সুমিষ্ট আম পাওয়া যায় না, তাই এর ব্যাপক চাহিদা তৈরি হবে বলে তিনি মনে করেন।

আমের আকার ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, ‘এই আম আম্রপালি আমের মতো দেখতে। এর কোনো আঁশ নেই এবং এর আঁটি ছোট বিধায় পাল্পের পরিমাণ অনেক বেশি। অন্যান্য আম পাকার পরে তিন-চার দিনের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায়, কিন্তু এই আম পাকার পরে সাত–আট দিন পর্যন্ত ভালো থাকে। এই আম পাকার পরে খুব আকর্ষণীয় রং ধারণ করে। “অল্টারনেট বিয়ারিং”–এর কারণে অন্যান্য আমগাছে যেখানে এক বছর ভালো আম হলে পরের বছর সেভাবে হয় না, সেখানে এই জাতের আম প্রতিবছর একই পরিমাণে ধরে।’

শফিউল্লাহ সুলতান আরও বলেন, ‘এই গাছ থেকে সায়ন (কলম তৈরি করার সময় আমগাছের ডালের যে ডগা ব্যবহার করা হয়, সেটাকেই কৃষিবিদেরা সায়ন বলে থাকেন) সংগ্রহ করে চারা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন নার্সারিতে দেওয়া হবে এবং দুই-তিন বছরের মধ্যে সেই চারা সবাই কিনতে পারবেন। আমগাছটি বাঘায় অবস্থিত হওয়ায় এর নামকরণ করা হয়েছে বাঘাশাহী। আগামী বছর থেকে নার্সারিতে এই জাতের চারা যাতে পাওয়া যায়, সে ব্যাপারে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে।