স্বামীর দেওয়া আগুনে দগ্ধ, ছয় দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে হার

প্রতীকী ছবি

মাত্র এক মাস আগে বিয়ে। এর মধ্যে স্বামী চাপ দিয়েছিলেন ভারতে নিয়ে যাওয়ার। তাতে রাজি হননি বলে তাঁকে আগুনে পুড়িয়ে মারলেন স্বামী। গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন পাষণ্ড স্বামী। তাতে দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ছয় দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়েছিলেন। অবশেষে হার মেনেছেন তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন হীরা বেগম (৩৩) নামের ওই নারী। হীরা বেগম যশোরের অভয়নগর উপজেলার সিঙ্গাড়ী গ্রামের বিল্লাল হোসেনের স্ত্রী। উপজেলার মরিচা গ্রামের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন স্বামী-স্ত্রী। গত বৃহস্পতিবার সকালে ওই ভাড়া বাড়িতেই বিল্লাল হোসেন তাঁর (হীরা) শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন।

বৃহস্পতিবার সকালে কথা-কাটাকাটি একপর্যায়ে বিল্লাল হীরা বেগমের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান। আগুনে তাঁর বুক, পিঠ ও দুই হাতের বেশির ভাগ অংশ পুড়ে যায়।

নিহত হীরা বেগমের ভাই ইয়াছিন সরদার জানান, বিল্লালের সঙ্গে এক মাস আগে তাঁর বড় বোন হীরা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাঁরা মরিচা গ্রামের একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। বিল্লাল তাঁকে ভারতে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু তাঁর বোন রাজি হননি। এ জন্য বিল্লাল তাঁকে প্রায়ই মারধর করতেন। বৃহস্পতিবার সকালে এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বিল্লাল হীরা বেগমের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান। আগুনে তাঁর বুক, পিঠ ও দুই হাতের বেশির ভাগ অংশ পুড়ে যায়। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার বিকেলে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁকে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে ভর্তির আগেই রাত সাড়ে তিনটার দিকে সেখানে তিনি মারা যান।

এ ব্যাপারে মঙ্গলবার সকালে বিল্লালের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যাচেষ্টার মামলা হয়েছে। মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে।
মিলন কুমার মণ্ডল, অভয়নগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত)

অভয়নগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিলন কুমার মণ্ডল বলেন, এ ব্যাপারে মঙ্গলবার সকালে বিল্লালের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যাচেষ্টার মামলা হয়েছে। ওই দিন দিবাগত রাত তিনটার দিকে ওই গৃহবধূ মারা গেছেন। মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে। আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।