সড়ক খুঁড়ে রাখার পাঁচ বছর, তবু পাকা হয়নি

সড়কটি পাকা করার জন্য পাঁচ বছর আগে খুঁড়ে রাখা হয়েছে। গতকাল রংপুর নগরের খটখটিয়া এলাকায়।  ছবি: প্রথম আলো
সড়কটি পাকা করার জন্য পাঁচ বছর আগে খুঁড়ে রাখা হয়েছে। গতকাল রংপুর নগরের খটখটিয়া এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

কাঁচা সড়ক পাকা করার জন্য খোঁড়া হয় ২০১৫ সালের জুনে। পরে ঠিকাদারের গড়িমসি ও বিলম্বের কারণে প্রকল্পটিই বাতিল হয়। এরপর কেটে গেছে পাঁচ বছর। সড়কটি পাকা তো হয়ইনি, বরং খুঁড়ে রাখার কারণে তা এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এটি রংপুর সিটি করপোরেশনের খটখটিয়া থেকে চব্বিশ হাজারী সড়ক। এর দৈর্ঘ্য দেড় কিলোমিটার। সড়কটি খটখটিয়া ও চব্বিশ হাজারী গ্রামের পাঁচ হাজারের বেশি মানুষের চলাচলের একমাত্র পথ। এই দুই গ্রাম ছাড়াও সিটি করপোরেশনের বাহাদুরশিং, হাবু ও কোবারু গ্রামেও এ পথে কম সময়ে যাওয়া যায়।

৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, কাজটি শুরু করার জন্য এলজিইডি কর্তৃপক্ষের কাছে অনেক দেনদরবার করা হয়েছে। কিন্তু পাঁচ বছর পার হলেও তা আমলে নেওয়া হচ্ছে না।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) রংপুর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের জুনে সিটি করপোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের খটখটিয়া এলাকা থেকে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চব্বিশ হাজারী পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার কাঁচা সড়ক পাকাকরণ প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রায় ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে কামরুজ্জামান নামের ঠিকাদার কাজটি পান। সড়কটি নির্মাণের জন্য মাটি খুঁড়ে রাখা হয়। ২০১৫ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদারের গড়িমসি ও বিলম্বের কারণে কাজটির প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়।

জানতে চাইলে ঠিকাদার কামরুজ্জামান বলেন, ‘ওই সময় ইটের দাম বেড়ে যাওয়ায় যথাসময়ে কাজটি শেষ করতে পারিনি। পরে তা বাতিল করা হয়। এতে আমারও অনেক ক্ষতি হয়েছে।’

গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, পুরো সড়কই খুঁড়ে রাখা হয়েছে। যেখানে-সেখানে মাটির স্তূপ। কোথাও ছোট ছোট গর্ত। গর্তে পানি জমে আছে।

এলাকার কয়েকজন বলেন, রাস্তাটি খোঁড়ার কারণে এবড়োখেবড়ো হওয়ায় এলাকার মানুষকে প্রায় তিন কিলোমিটার ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে। অথচ রাস্তাটি খুঁড়ে না রেখে আগের মতো থাকলেও এসব গ্রামে যেতে ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় লাগত।

খটখটিয়া এলাকার বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক আবদুল মান্নান জানান, নগরের ভেতরের একটি সড়ক এভাবে অবহেলায় পড়ে থাকবে, তা ভাবা যায় না।

চব্বিশ হাজারী এলাকার বাসিন্দা কলেজশিক্ষক গৌতম রায় বলেন, একটু বৃষ্টি হলে সড়কটি ডুবে যায়। প্রায়ই কাদাপানিতে পিছলে পড়েন পথচারীরা।

জানতে চাইলে এলজিইডির রংপুর কার্যালয় থেকে সদ্য বদলি হওয়া নির্বাহী প্রকৌশলী আখতার হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ওই ঠিকাদারের জামানতের টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সড়কটির কাজ আবার শুরু করার জন্য রংপুর বিভাগ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।