সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করে রাখায় ভোগান্তির শেষ নেই

রংপুর নগরের গুরুত্বপূর্ণ জুম্মাপাড়ার সড়ক সংস্কারের জন্য গত জানুয়ারি মাসে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু ঠিকাদার কাজ শুরু করেছে আগস্ট মাসে। এ পর্যন্ত মাত্র ২০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এখন রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে ফেলে রাখায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে মানুষ।

রংপুর নগরের বাণিজ্যিক এলাকা মিঠুর গলিতে সড়ক খুঁড়ে রাখা হয়েছে। এতে নগরের জুম্মাপাড়াসহ কয়েকটি এলাকার মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।প্রথম আলো

রংপুর নগরের গুরুত্বপূর্ণ জুম্মাপাড়ার সড়ক সংস্কারের জন্য খোঁড়াখুঁড়ি করে ফেলে রাখা হয়েছে। এতে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে ওই এলাকার লোকজন এক মাস ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। সড়কের এই দুরবস্থার কারণে ওই এলাকার ব্যবসায়ীরাও পণ্য আনা–নেওয়া করতে পারছেন না।

সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে নগরের মিঠুর গলি থেকে নিউ জুম্মাপাড়া পাকার মাথা পর্যন্ত এক কিলোমিটার সড়ক সংস্কার ও দুই পাশে নালা নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র অনুযায়ী সড়কটির প্রস্থ ১৬ দশমিক ৪ ফুট। এই সড়কটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা আগামী ডিসেম্বর মাসে। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে সড়কের নির্মাণকাজ শেষ হবে না বলে আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। কারণ এখনো সড়কটির কাজ শুধু খোঁড়াখুঁড়ির মধ্যে সীমাবন্ধ রয়েছে। অনেক আগে কাজ শুরু করার কথা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আগস্ট মাসে কাজ শুরু করেছে। এ পর্যন্ত সড়কের ২০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

নগরের জুম্মাপাড়া এলাকাসহ আরও অনেক এলাকার লোকজন নগরের মিঠুর গলি এলাকা দিয়ে চলাচল করে। এখানে সোনালী ব্যাংকের একটি শাখা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, ওষুধের দোকানসহ বিভিন্ন পণ্যের শতাধিক দোকান রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের জুম্মাপাড়া এলাকাসহ আরও অনেক এলাকার লোকজন নগরের মিঠুর গলি এলাকা দিয়ে চলাচল করে। এখানে সোনালী ব্যাংকের একটি শাখা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, ওষুধের দোকানসহ বিভিন্ন পণ্যের শতাধিক দোকান রয়েছে। সংস্কারের জন্য সড়কের দুই পাশ খুঁড়ে রাখায় ব্যবসাীয়রা নিজ উদ্যোগে কাঠ ও বাঁশ ফেলে চলাচল করছেন। এক মাসের বেশি সময় ধরে সড়কের কাজ বন্ধ।
ইলেকট্রনিক সামগ্রীর দোকানের ব্যবসায়ী মেরাজুস সালাম বলেন, ‘রাস্তার কাজ না করে এভাবে খুঁড়ে রাখার কারণে আমাদের ব্যবসার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এর চেয়ে আগেই ভালো ছিল।’

লাইনুর নাহার নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘যেভাবে রাস্তা খুঁড়ে রাখা হয়েছে, তাতে চলাচল করা কষ্টকর ব্যাপার। যেকোনো সময় গর্তে পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে।’

সোনালী ব্যাংকে অবসর ভাতার টাকা তুলতে এসেছেন অনেক বয়স্ক ব্যক্তি। রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে রাখায় তাঁদেরও অনেক কষ্ট ও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়কের খানাখন্দ পেরিয়ে ব্যাংকে প্রবেশ করতে গিয়ে অনেকে পা পিছলে পড়েও গেছেন। এ সময় একজন বৃদ্ধ বলেন, ‘এভাবে জনগণকে ভোগান্তি দিয়ে উন্নয়ন না করাই ভালো।’

এ ব্যাপারে ঠিকাদার খাইরুল কবির বলেন, ‘শর্ত সাপেক্ষে এই কাজটি সাব ঠিকাদারকে করতে দিয়েছি। এর বেশি কিছু তিনি বলতে চাননি।’

সাব ঠিকাদার লিটন পারভেজ বলেন, এ এলাকায় কিছু দোকানপাট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থাকায় কাজ করতে গিয়ে অনেক অসুবিধা হচ্ছে। তাই কাজে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।
সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এমদাদ হোসেন বলেন, সড়ক এভাবে খোঁড়াখুঁড়ি করে ফেলা রাখায় নগরবাসীর কষ্ট হচ্ছে এ কথা ঠিক। তবে শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে।

এ বিষয়ে রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘রাস্তার কাজের ধীরগতির কারণে মানুষের কষ্ট হচ্ছে। এ জন্য আমি নগরবাসীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। যত দ্রুত সম্ভব কাজটি শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে।’