হঠাৎ শিলাবর্ষণে ঠাকুরগাঁও শহরের পথঘাট বরফে সাদা

ঠাকুরগাঁও শহরের বিভিন্ন এলাকায় আজ শুক্রবার বিকেলে ব্যাপক শিলাবর্ষণে বসতবাড়ির উঠান ও পথঘাটে বরফ জমে সাদা হয়ে যায়ছবি: প্রথম আলো

ঠাকুরগাঁও শহর ও শহরতলির বিভিন্ন এলাকায় আজ শুক্রবার বিকেলে ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হয়েছে। শিলাবৃষ্টিতে শহরের বসতবাড়ির উঠান, রাস্তাঘাটে বরফের স্তর জমে সাদা হয়ে যায়। শহরের বাসিন্দারা বলছেন, এত পরিমাণে শিলাবৃষ্টি এর আগে তাঁরা দেখেননি।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বেলা সোয়া তিনটায় আকাশ কালো হতে শুরু করে। সাড়ে তিনটার দিকে বৃষ্টির সঙ্গে শুরু হয় শিলাবর্ষণ। এ সময় ১ সেন্টিমিটার ব্যাসার্ধের শিলাও দেখা গেছে। বৃষ্টির সঙ্গে শিলা পড়লেও কোনো ঝড় হয়নি। শিলাবৃষ্টির পর অনেকেই ঘর থেকে বের হয়ে আসেন। বরফে সাদা হয়ে থাকা রাস্তায় সেলফি তুলতে ও ভিডিও করতে দেখা যায় অনেককে।

শহরের টিকিয়াপাড়া মহল্লার বাসিন্দা মোকছেদ আলী বলেন, এত শিলাবর্ষণ এ এলাকার মানুষ আগে কখনো দেখেননি। এলাকার মাটি শিলায় ঢেকে সাদা হয়ে গেছে।

ঠাকুরগাঁও শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন এলাকায় আজ শুক্রবার বিকেলে ব্যাপক শিলাবর্ষণ হয়েছে
ছবি: প্রথম আলো

শহরের গোবিন্দনগর এলাকার লিচুচাষি রমজান আলী (৬৪) বলেন, তাঁর তিনটি লিচুবাগান আছে। শিলাবর্ষণের পর বাগান বরফের স্তর জমে সাদা হয়ে যায়। বরফ গলে গেলে দেখা যায়, বাগানে পাতার সঙ্গে অনেক মুকুল ঝরেছে। তিনি বলেন, এলাকার চাষিদের বেশ ক্ষতি হয়েছে। লিচুর জন্য ইতিমধ্যেই অনেকে অনেক ব্যয় করেছেন। এভাবে মুকুল ঝরে যাওয়ায় তাঁরা হতাশ।

আমচাষি সাবেদ উদ্দিন বলেন, ‘আমার বয়স ৭৭ হয়ে গেইচে। এমন পাথর (শিলাবর্ষণ) আর দেখুনি। আমবাগানলাত অনেক মুকুল দেখা দিছিল। পাথরে সব পড়ে গেইল।’
সালন্দরের ইয়াকুবপুর এলাকার সবজিচাষি রণজিত রায় বলেন, নিমেষেই খেত সাদা হয়ে গেল। পাথরে খেতের লাউগাছের পাতা শেষ। এ গাছ আর টিকবে বলে মনে হয় না।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঠাকুরগাঁও কার্যালয়ের উপপরিচালক আবু হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ঠাকুরগাঁও পৌর শহর ও শহরতলির বিভিন্ন এলাকায় শিলাবর্ষণ হয়েছে। এতে খেতের গম, ভুট্টা, সবজি, আম ও লিচুর ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তবে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা এখনই নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।