হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে মেয়রের নাম থাকায় বাদীর ওপর হামলা

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা সেবচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে মেয়রের নাম থাকায় এবার মামলার বাদী মাসুদুরের ছোট ভাই আবিদুর রহমান ওরফে প্রান্তর ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

মেয়রের সমর্থকেরা এ হামলা করেছেন বলে অভিযোগ আবিদুর রহমানের। হামলার অভিযোগে মেয়রের কাছের লোক হিসেবে পরিচিত গৌরীপুর পৌর যুবলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান মিথুনসহ পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ অক্টোবর গৌরীপুর পৌর শহরের মধ্যবাজার পানমহাল এলাকায় একটি চায়ের দোকানে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় মাসুদুর রহমান ওরফে শুভ্রকে (৩৪)। এ ঘটনায় গৌরীপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম এবং গৌরীপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রিয়াদুজ্জামনসহ ১৪ জনকে আসামি করে মামলা করেন আবিদুর রহমান। মাসুদুর গত জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত গৌরীপুর পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন বলে মেয়র এ হত্যাকাণ্ডে ইন্ধন দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

গত বুধবার মামলাটির তদন্ত সংস্থা ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ মেয়রসহ ১৯ জনের নামে অভিযোগপত্র দেয় আদালতে। মেয়রকে আসামি রেখে অভিযোগপত্র দেওয়ার জের ধরে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে গৌরীপুর পৌর শহরের কালিপুর এলাকায় আবিদুর রহমান ও নিহত মাসুদুরের সমর্থকদের ওপর হামলা করেন মেয়রের লোকেরা।

আবিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে কালিপুর এলাকায় এক অসুস্থ লোককে দেখতে গিয়েছিলাম। এ সময় আমার সঙ্গে আমার ভাই মাসুদুর রহমানের কিছু রাজনৈতিক সহকর্মী ছিলেন। অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখে ফেরার পথে রাত সাড়ে আটটার দিকে কালিপুর মোড় এলাকায় মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলামের লোকেরা রামদা নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করেন। আমরা দৌড়ে জীবন বাঁচালে তাঁরা আমাদের পাঁচটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন।’

আবিদুর রহমান ও তাঁর চাচা সাদেকুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘গত ৩০ জানুয়ারির নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সৈয়দ রফিকুল ইসলামের লোকেরা আমাদের ওপর নানাভাবে নির্যাতন করছেন এবং হুমকি দিচ্ছেন। মাসুদুর হত্যা মামলার সাক্ষীদের হুমকি দিচ্ছেন মেয়রের লোকেরা। গত বুধবার মামলার অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে মেয়রের লোকেরা আমাদের সব সময় অনুসরণ করছেন সুযোগ পেলেই আক্রমণ করার জন্য।’

মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মাসুদুর হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে আমার নাম থাকায় মাসুদুরের ভাইসহ কিছু মানুষ আনন্দ মিছিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ খবর পেয়ে আমার কয়েকজন সমর্থক তাঁদের প্রতিরোধ করতে চাইলে কিছুটা বিশৃঙ্খলা ঘটে। তবে এসব ঘটনা আমি আগে থেকে জানতাম না। ঘটনার পর জেনেছি।’

গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান আবদুল হালিম সিদ্দিকী বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে আবিদুরের ওপর হামলার ঘটনায় গৌরীপুর পৌর যুবলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান ওরফে মিথুনসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় গৌরীপুর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।