হত্যা মামলার পাল্টা ডাকাতি মামলা

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার জিয়ালা নলতা গ্রামের লুৎফর নিকারী হত্যা মামলার বাদী ও সাক্ষীদের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা হয়েছে। বুধবার হত্যা মামলাটির প্রধান আসামি সরদার মশিয়ার রহমানের বড় ভাই গুলজার রহমান মামলাটি করেন।

মশিয়ার রহমান তালা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান। লুৎফর হত্যা মামলার পর তাঁকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। হত্যা মামলাটির অপর দুই আসামি হলেন তালা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ তুহিন হোসেন ও বারুইআটি গ্রামের রনি বিশ্বাস।

লুৎফরের ছেলে সেলিম নিকারী বলেন, ১৭ আগস্ট রাত ১১টার দিকে তিনি জিয়ালা নলতা এলাকায় নলবুনিয়া সরকারি খালের মুখে মাছ ধরতে যান। চুরির অভিযোগ তুলে সেখানে তাঁকে মশিয়ার রহমান, শেখ তুহিন ও রনি বিশ্বাস মারধর করেন। খবর পেয়ে লুৎফর নিকারী গেলে তাঁকেও মারধর করে খালের পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় ক্ষুব্ধ জনতা মশিয়ারকে ধরে পুলিশে দেন। ১৮ আগস্ট তিনি মামলা করেন। এখন হত্যা মামলা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ডাকাতির মামলা করা হয়েছে।

ডাকাতির মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ১৭ আগস্ট রাত ১১টার দিকে জিয়ালা নলতা গ্রামের সেলিম নিকারী, রুহুল আমীন নিকারী, আবু মুছা নিকারী, রফিকুল নিকারী, শহীদুল নিকারী, জিয়া নিকারী, আবদুল হাই নিকারীসহ অজ্ঞাতনামা পাঁচজন নলতা বিলে মশিয়ার রহমানের ১২০ বিঘার চিংড়িঘেরে মাছ লুট করতে যান। আসামিরা ঘেরের কর্মচারী রনি বিশ্বাস ও শিমুল মোড়লকে ঘরে আটকে রেখে মাছ ধরতে শুরু করেন। পাশের ঘেরের পাহারাদারেরা টের পেলে সশস্ত্র হয়ে আসামিরা তাঁদের দিকে ছুটে যান। তখন পাহারাদারেরা ভয়ে চলে যান। আসামিরা ৫ মণ মাছ, ২টি টর্চলাইট, নগদ ১৬ হাজার টাকা ও ২টি মুঠোফোন নিয়ে পালিয়ে যান।

এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতিকালে সেলিম নিকারী ডাকাতি করতে গিয়ে ঘেরে ধরা পড়েছেন—এমন খবরে তাঁর বাবা লুৎফর নিকারী হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। আসামিরা অপকৌশল হিসেবে লুৎফরকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে সরদার মশিয়ার রহমান, রনি বিশ্বাস ও শেখ তুহিনের বিরুদ্ধে ১৮ আগস্ট থানায় মামলা করেন। এ মামলায় সরদার মশিয়ার জেলহাজতে রয়েছেন।

বুধবার বেলা ১১টার দিকে গুলজার রহমান আমলি আদালত-৩-এ মামলা করেন। আদালতের বিচারক মেহেদী হাসান মুবারক মুনীম আগামী ১৮ নভেম্বরের মধ্যে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন।

জানতে চাইলে বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে তালা থানার ওসি মেহেদি রাসেল বলেন, ডাকাতির মামলার ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।